প্রতিনিধি
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিতা পাল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সকাল সোয়া ১০টায় বোর্ডের পর্যবেক্ষক দলের ৩ জন সদস্য কেন্দ্র পরিদর্শন কাজ শেষ করে বেলা ১টায় কেন্দ্র ত্যাগ করেন। এরপর হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের কিছু শিক্ষকের উস্কানিতে কয়েক শ’ এইচএসসি পরীক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসের মসজিদসহ ২০টি পরীক্ষা কক্ষের আসবাবপত্র, দরজা-জানালা, জানালার কাচ, কলেজ গেইট, বাগানের দেয়াল, টয়লেটের বিভিন্ন পাইপ ও বাইরের চারা গাছ ভেঙ্গে ফেলে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও পর্যবেক্ষকগণ তাদের বাধা দিতে গেলে তাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের বেপরোয়া হামলা ও ভাংচুরের কারণে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
তিনি আরো বলেন, হামলার খবর পেয়ে এলাকাবাসীকে মসজিদের মাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে ছাত্রদের হামলায় কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন । তবে আহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা আশেপাশের বাড়িঘরেও হামলা করে। অনিতা পাল বলেন, আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি।
ছাত্রদের তান্ডবের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মুর্শিদুল ইসলাম ও মডেল কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবির পাটোয়ারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর কাছে ঘটনার দায় মাথায় নিয়ে কলেজের ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দেন বলে ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ অনিতা পাল বলেন।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল জীববিজ্ঞান ২য় পত্র, ফিন্যান্স ২য় পত্র ও পৌরনীতি ২য় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় শুরুতেই কক্ষের মধ্যে ঝামেলা করে। পরে রচনামূলক পরীক্ষায় বোর্ডের সদস্যের উপস্থিতির কারণে নকল করতে না পেরে পরীক্ষা শেষে তারা এ তা-ব চালায়। তবে মডেল কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবির পাটোয়ারী দাবি করেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে খাতা নিয়ে যাওয়ায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে হামলা করেছে। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ দুটি কলেজের মধ্যে ফলাফল নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা থেকে ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা শাহ আলী রেজা আশরাফী জানান, বোর্ড থেকে টিম আসার কারণে ও প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজটি করেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে যথা সময়ে খাতা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্য নয়।
ইউএনও শেখ মুর্শিদুল ইসলাম জানান, আমরা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনের পরে বসবো। তবে ডিগ্রি কলেজের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার ব্যয়ভার মডেল কলেজকে গ্রহণ করতে হবে।
ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল চাঁদপুর কণ্ঠকে মুঠোফোনে বলেন, আমাকে কলেজ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষকে বলা হয়েছে বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিতে আর পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে আইনি বিষয়টি দেখার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যোৎসাহী সদস্য শাহজামাল, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাহমুদ আহমেদ মিঠু, অভিভাবক সদস্য শুকু মিয়া, শিক্ষক প্রতিনিধি স্বপন কুমার পাল, কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোরশেদ আহম্মেদ মজুমদার প্রমুখ।