এম. সাখাওয়াত হোসেন মিথুনঃ
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক যে কোন মূহুর্তে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে! হাজীগঞ্জ বাজার থেকে দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার মহামায়া বাজার পর্যন্ত ৪টি ব্রীজের একে বারে দৈন্যদশা হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে।
এ ঝরাজীর্ন ব্রীজ গুলো হলো হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজার বোয়ালজুড়ি খালের উপরের বড় ব্রীজ, হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার (মিডওয়ে হাসপাতালের সামনে) মিঠানিয়া ব্রীজ, দেবপুর মহামায়া বাজারের মাঝামাঝি অংশে অবস্থিত স’মিলের পাশে ঝমঝমিয়া খালের উপরের ব্রীজ ও মহামায়া বাজারের পূর্ব পার্শের ব্রীজ এ ব্রীজগুলো ভেঙ্গে গিয়ে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। জনগুরুত্বপূর্ন চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কটি বন্ধ হয়ে গেলে যেমনিভাবে ভোগান্তির স্বীকার হবে লাখ লাখ মানুষ, তেমনিভাবে ভোগান্তির স্বীকার হবে গাড়ীর মালিক ও চালকগণ, বন্ধ থাকবে হাজার হাজার যানবাহন। এই ব্রীজগুলোর মধ্যে একেবারে ঝরাজীর্ন ও রুগ্ন অবস্থায় পড়ে আছে হাজীগঞ্জ বাজারের মিঠানিয়া, জমজমিয়া ও মহামায়া পূর্ব বাজারের খালের উপর ব্রীজ। একেবারে জরুরী হয়ে পড়েছে এ ৩টি ব্রীজের নির্মান করা। এ চারটি ব্রীজ একেবারে সরু হওয়ার কারনে ট্রাপিক দুইপাশে দাড়িয়ে গাড়ী সিগন্যাল দিয়ে পারাপার করাচ্ছে। অন্য দিকে সরু এ পুলগুলো হওয়ার কারনে লেগে আছে ঘন্টার পর ঘন্টা জানযাট।
চাঁদপুর জেলার প্রানকেন্দ্র হাজীগঞ্জ বাজার। তাই মহাসড়কে গাড়ী লেগে আছে বাজারের উপর লাগামহীন যানজট। এই ব্রীজগুলো দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্রীজটির এতটাই দৈন্যদশা যে, যে কোন মূহুর্তে ভারি যানবাহন চলাচলের সময় বিশেষ করে বাস-ট্রাক এই ব্রিজ থেকে নিচে পড়ে গিয়ে বহু মানুষের প্রাণহানির কারণ হয়ে যেতে পারে। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক বাহিনী আক্রমণ চালায় ব্রীজগুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্যে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এই ব্রীজ গুলি তাই মুক্তি বাহিনীর শক্ত প্রতিরোধ করেও পুরোপরি ধ্বংস করতে পারেনি তারা। তবে অবকাঠামোগত বেশ ক্ষতি করেছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪১ বছর পরও কোনো সরকারের সু-দৃষ্টি না দেওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রীজগুলো দিয়েই প্রতিনিয়ত সহস্রাধিক ভারি যানবাহন আসা-যাওয়া করে। এই ব্রীজগুলোর উপরে বড় বড় গর্ত হয়ে যাওয়ার কারনে সড়ক বিভাগ কর্তৃক স্টিলের কয়েকটি সিট ও পিচ ঢালাইয়ের মাধ্যমে কোন রকমে ব্রীজ গুলোকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। ব্রীজগুলোর উপর দিয়ে বাস ট্রাক পারাপার হওয়ার সময় ব্রীজটি প্রচন্ড ঝাকুনি দিয়ে কেপে উঠে। এতে করে যাত্রীরা আতঙ্কের মাঝে থাকতে হয়, ঝাঁকুনিতে মনে হয় যেন ব্রীজ ভেঙ্গে গাড়ী নিচে পড়ে যাবে। ব্রীজগুলোর পাশে দিয়ে বয়ে গেছে পানির লাইন, গ্যাস লাইন, টি এনটি লাইন সহ প্রয়োজনিয় কাজে লাইনগুলো। এই লাইনগুলো সাপোর্ট নেওয়া হয় ব্রীজ থেকে। ব্রীজগুলোর রেলিং ও পাশের অংশ ভেঙ্গে ঝুলে আছে।
দীর্ঘ দিন ধরে এভাবেই এই মহাসড়কের ৪টি ব্রীজের ভাগ্য ঝুলে আছে। কুমিল্লা থেকে আসা যাত্রী ও বাস ড্রাইভারদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, এই সড়কে হাজীগঞ্জ থেকে মহামায়া পর্যন্ত যে অবস্থায় পড়ে আছে ৪টি ব্রীজ এর রকম আর কোথায়ও এ সড়কে ঝুঁকি পূর্ন ব্রীজ আমাদের চোখে পড়েনি। ব্রীজগুলোর উপর দিয়ে চালকগণ যান চলাচলে হুশিয়ারী সংকেত ফলো করে গাড়ী পারাপার করে।
অন্য দিকে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে হাজীগঞ্জ বাজারের বড় ব্রীজ ও মিঠানিয়া ব্রীজের পাশে তৈরী হয়ে আছে ব্রেইলী ব্রীজ। কবে নাগাত পুরনো ব্রীজগুলো ভেঙ্গে নির্মান কাজ শুরু হবে তা কেউ জানে না। ব্রীজ ভাঙ্গার জন্য নির্মাণ করা ব্রেইলী ব্রীজ ও এখন পূর্ন নির্মাণ করতে হবে।
সড়ক অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর পূর্বে দুইজন ঠিকাদার হাজীগঞ্জ বাজারের এই দুটি ব্রীজ পূর্ন নির্মান করার কাজ পায়। এরই মাঝে হু হু করে রড, সিমেন্ট ও পাথরের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেউলিয়া হয়ে গেছে ঐ ঠিকাদারগন।
এই ব্রীজগুলো নিয়ে স্থানীয় পত্র পত্রিকার সহ জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিঙ্ মিডিয়াতে ও বহুবার প্রচার করা স্বার্তেও কোন কাজে আসেনি স্থানীয় সাংবাদিকরা একের পর এক নিজউ ছাপিয়ে যাচ্ছে। জনসাধারনের কথা চিন্তা করে মানবিক কারনে একের পর এক এই সংবাদটুকু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহা-সড়কের হাজীগঞ্জ বাজার থেকে মহামায়া বাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে ৪টি ব্রীজ পূর্ন নির্মান হলে চাঁদপুর-কুমিল্লা সেতুবন্ধন আরো জোরদার হবে।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ