হাজীগঞ্জ: চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আইন না মেনে অতিরিক্ত মাল বহন ও ভারী যান চলাচলের কারণে এ ভাঙন সৃষ্টি হলেও সে ব্যাপারে প্রশাসনের উদাসীনতায় প্রতিদিন ঘটছে একাধিক দুর্ঘটনা। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ থেকে ফরিদগঞ্জ অংশের রামগঞ্জ সীমান্ত ঘনিয়া পর্যন্ত মহাসড়ক সংস্কারের কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারো রাস্তায় ভাঙন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন অংশের অসংখ্য স্থানে মাকড়শার জালের মতো ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। দেবে গেছে মহাসড়কের অনেকাংশ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো মহাসড়কের দেবে যাওয়া অংশগুলোর কয়েকটি স্থান দায়সারা গোছের মেরামত করলেও তা কোনো কাজে আসছে না। মেরামতের কয়েকদিন পরই তা আবারো পূর্বাবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।
এদিকে সংস্কারের নামে গর্ত ভরাটের মহাসড়ক উঁচু-নিচু করার ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। অভিযোগ রয়েছে, বেশ কয়েকবার মহাসড়ক সংস্কারের নামে কয়েক লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও নামমাত্র সংস্কার করে পুরো টাকাই হাতিয়ে নিচ্ছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ মহাসড়কের ফরিদগঞ্জ অংশসহ সংস্কারের কাজ বাবদ লাখ লাখ টাকা তিনটি আলাদা ধাপে কাজ পরিচালিত হয়ে আসলেও বর্তমানে খানাখন্দে যানচলাচলে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর আগে বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যদিয়ে খুটিনাটি গর্ত ভরাটের নাম করে সংস্কার করলেও প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচলে গর্তের ধারণ বেড়েই চলছে। চলতি বছরের শুরুতে যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পূর্ণসংস্কারের আশ্বাস দিলেও বেধে দেয়ার সময় পার হয়ে বর্তমানে সড়কটি সম্পন্ন যানচলাচলে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কচুয়া রানা বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১০ কিলোমিটার সংস্কারে প্রায় ৪ কোটি টাকার ট্রেন্ডার বাতিল হয়। তার পরেও যোগাযোগ মন্ত্রীর আশ্বাসে পূনরায় ট্রেন্ডার চূড়ান্ত হলেও বর্তমানে চাঁদপুর সড়ক বিভাগ অর্থনেই বলে এমন অভিযোগে কাজ ধরতে পারছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ বাস-মিনিবাস মালিক কর্তৃপক্ষ জানান, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে যাচ্ছে। ওভারলোডের গাড়ি চলাচলে সওজ কখনো বাধা না দেয়ায় এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। পরিসংখ্যান মতে, চলতি বছরের কয়েকটি ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ ও করেছেন কয়েকজন যাত্রী, আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। মহাসড়কের বেহালদশা ও দায়সারা গোছের সংস্কার প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
এ দিকে স্থানীয় যাত্রী সাধারণ ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ গত বিএনপি সরকারের আমলে কাজ করার পর দীর্ঘ বছর পাড়ি দিয়েও এখন পর্যন্ত সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই সরকারের। দেখা যায় গাড়ী চলাচলের সময় দোকান পাট, ধূলা-বালি যেন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। মাঝে মধ্যে সড়ক বিভাগের লোকজন সংস্কারের নামে টুকিটাকি কাজ করলেও গর্তের সংখ্যা কমেনি। তাই আমাদের জোরদাবি আবারও যোগাযোগ মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে অছিরেই তার ওয়াদা রাখতে পূর্ন সংস্কারের উদ্যোগ নিবেন।