হাজীগঞ্জে হার্বাল চিকিৎসার নামে চলছে প্রতারণা। আর প্রতারণা শিকার হচ্ছেন গ্রামগঞ্জ থেকে আসা অসহায় রোগীরা। বিভিন্ন হার্বাল চিকিৎসা কেন্দ্রে দেখা যায় কর্মচারীরাই ডাক্তারের চেয়ারে বসে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা যায়। সরজমিনে গিয়ে যায়, হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ রোড আখন্দ হার্বাল মেডিকেল সেন্টার। সেখানে, হাকিম মোঃ নিজাম উদ্দিন আখন্দ সর্বাধুনিক ইউনানী চিকিৎসা ও বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আখন্দ হার্বাল মেডিকেল সেন্টারটি। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে হাঁপানী, যৌন, বাতব্যথাৎ, স্ত্রী রোগের চিকিৎসা, মোটা তাজাকরণসহ নানা ধরনের চিকিৎসা দিয়ে আসছে। এমনকি তিনি নরসিংদী জেলার রায়পুরা পৌরসভাও একটি চেম্বার রয়েছে বলে জানা যায়। সেখাও তিনি এ ধরণের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। সাধারণ লোকদের প্রশ্ন যেখানে হার্বাল ডাক্তারের কোন ডিগ্রি নেই তারা কিভাবে এতো রোগের চিকিৎসা করেন। হাজীগঞ্জের বিভিন্ন হার্বাল মেডিকেল গ্রামগঞ্জ থেকে আসা রোগীরা প্রতিনিয়তই হচ্ছে প্রতারিত। অনেকেই হার্বালের ঔষধ খেয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট করেছেন। কিন্তু কোন উপকারে আসেনি বলে ভোক্তভোগীদের দাবী। প্রতি নিয়তই বিভিন্ন স্থানীয় স্যাটেলাইটে যৌন চিকিৎসার নামে বড় বড় অশ্লীল বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ রোগীদেরকে প্রতারিত করছে, এমনকি সাধারণ জনগণকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করছে। এছাড়াও হাজীগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখে উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য রঙ বেরঙের যৌন পোষ্টার দিয়ে বিভিন্ন হার্বাল চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রচার চালাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এসমস্ত পোষ্টার দেখে নিজেদেরকে লজ্জা বোধ করছে। বর্তমান সরকার যেখানে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানিকে কঠিন ভাবে প্রতিরোধ করছেন, সেখানে কি এ ধরনের যৌন পোষ্টার ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির আওতায় পড়ে না?
গতকাল আখন্দ হার্বাল মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে এ ধরনের একটি দৃশ্য দেখা যায়। যেখানে ডাক্তারের চেয়ারে বসে কর্মচারী মোঃ শামীম রোগীদেরকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তাৎক্ষনিক রোগীরা বিষয়টি জানতে পেরে আগত রোগী বকুল, সীমা ও ফারহানা বলেন, আমরা ভাবছি তিনিই ডাক্তার এবং সে নিজেই ডাক্তার পরিচয় দিয়েছে। পরে রোগীরা হার্বাল চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রতারণা হচ্ছে বলে অনুধাবন করে চলে যান।
এ বিষয়ে আখন্দ হার্বাল মেডিকেল সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী ডাঃ হাকীম মোঃ নিজাম উদ্দিন আখন্দ জানান, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা সম্পূর্ণ বেআইনী এর জন্য আপনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, যদি কোনে ডাক্তার সরকারী হার্বাল মেডিকেল কলেজ থেকে ডিগ্রি নিচ্ছে তারাই হার্বালের বৈধ ডাক্তার। বর্তমানে দেখা যায়, অনেকেই হার্বালের উপর ১ মাস থেকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট নিয়ে ডিগ্রী ধারী ডাক্তার সেজে হার্বাল চিকিৎসার নামে প্রতারণা চালাচ্ছে। এমনকি তারা সকল চিকিৎসার ১০০% প্রতিশ্রুতি দিয়ে সকল চিকিৎসা দেওয়া হয় এমন ডাক্তারাই প্রতারক ডাক্তার।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, এ সমস্ত হার্বাল চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।