- অর্থের বিণিময়ে মিলছে ইনজুরি সনদ
- ডাক্তার ও কর্মচারীদের সাথে প্রাঃ ক্লিনিকের সখ্যতা
- হাসপাতাল চত্তরে নোংরা পরিবেশ ও দালালদের দৌরাত্ম
- ডাক্তারদের আগমন বিলম্ব হলেও প্রস্থান দ্রুত
- আহত রোগীদের সাথে সেবিকাদের রুঢ় আচরণ
- নি¤œমানের খাবার পাচ্ছে রোগীরা
চাঁদপুর জেলার সাধারণ অসহায় থেকে শুরু করে উচ্চবৃত্ত পর্যন্ত প্রায় সকলের কাছে স্বাস্থ্য সেবার জন্য একমাত্র ভরসা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। এ হাসপাতালে গতানুগতিক ধারায় দুর্বল স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি সেবা গ্রহনকারি রোগীদের পরিবেশন করা হচ্ছে নি¤œমাণের খাবার। এ বিষয়ে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন চাঁদপুরের অভিজ্ঞ মহল। হাসপাতালের উপর বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ সরজমিন প্রতিবেদনে জানাযায়, বিভিন্ন মারামারি, সড়ক দূর্ঘটনা, ধর্ষন, অপমৃত্যু ইত্যাদীর কারনে আগত রোগীদের ইনজুরি সনদ প্রদানের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তার কাছ থেকে অর্থের বিণিময়েনির্ভর করে ইনজুরি সনদে আঘাতের গুরুত্ব। অসহায় হত দরিদ্রদের উপর যারা অত্যাচারের রোলার চালিয়ে বেড়াচ্ছে সেইসব অসহায় লোকদের অর্থের অভাবে ও প্রভাবশালিদের রক্তচক্ষু আর টাকার জোরে ইনজুরি সনদের প্রতিবেদন চলে যায় দরিদ্রদের বিপক্ষে। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত কোন ডাক্তার ও কর্মচারি প্রাইভেট ক্লিনিকের সাথে জড়িত না থাকার আইন থাকলেও এ হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তার ও কর্মচারি আশেপাশের প্রাইভেট হাসপাতাল ও প্যাথলজির সাথে জড়িত। তার প্রায় সময়ই দায়িত্বপালনরত অবস্থায় হাসপাতালে রোগীদের দির্ঘ লাইনে দাড় করিয়ে কেউবা বাসায় গিয়ে রোগী দেখে আসছেন। হাসপাতালের আশেপাশের প্যাথলজি গুলোর সাথে হাসপাতালের কর্মচারিরা মালিকানা শেয়ারে জড়িত। যার কারণে তাই তাদের নিজস্ব ব্যাবসার তাগিতে রোগীদেরকে হাসপাতালের সেবার মান ভালোনা অথবা এখানে পরীক্ষার মেশিন নাই ইত্যাদী কথা বলে রোগীদের নিজস্ব প্যাথলজিতে পাঠিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তাছাড়া অনেক ডাক্তারদের সাথেও রয়েছে প্যাথলজিগুলোর সাথে যোগসাজস। তারা সেখান থেকেও পাচ্ছে রোগী পাঠানোর ভাগ বাটোয়ারা।
গত কয়েক দিন পূর্বে পষ্কিার পরিচ্ছন্নতা দিবস পালন কালে ১ দিন দিবস পালনের স্বার্থে হাসপাতাল কিছুটা পরিষ্কার করলেও পরের দিন থেকেই হাসপাতাল এলাকা নোংরা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ৩য়-৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারিরা তাদের মন মতো কোন রকম নামমাত্র পরিষ্কার করেই খালাস। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ৩ টা পর্যন্ত হাসপাতালের বারান্দায় আশেপাশের গড়ে উঠা হাসপাতাল নির্ভর পালিত দালালদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়ে গ্রাম থেকে আগত সাধারণ রোগীরা। তারা রোগীদের নানা প্রলোভনে নিয়ে যায় প্রাইভেট প্যাথলজি ও ক্লিনিকে।
হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিদিনই হাতে গোনা কয়েকজন ডাক্তার ব্যাতিত বাকিদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে আগমন করেন ১০টা থেকে ১১টায়। অন্যদিকে আগমন বিলম্ব হলেও প্রস্থানের ক্ষেত্রে দেখা যায় দ্রুততা। তাদের বেশিরভাগ বেলা ১ টার মধ্যেই কয়েকজন ডাক্তার ব্যাতিত বাকিরা সবাই হাসপাতাল ত্যাগ করে। আহত রোগীদের সাথে সেবিকারা অনেকেই বিরক্তভাব প্রদর্শন করেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের নি¤œমানের স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি আহত রোগীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতি বেলায় পঁচা নি¤œ মানের খাবার দেওয়া হচ্ছ্্ে । হাসপাতাল সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী প্রতিদিন সকাল দুপুর ও রাতে মিলে ১‘শ ২৫ টাকা হারে খাবার পরিবেশন করার কথা থাকলেও রোগীরা সেই তুলনায় প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টাকার খাবার পাচ্ছেন বলে রোগীরা জানায়। হাসপাতালের এ ধরনের নি¤œমানের স্বাস্থ্য সেবার কারনে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। রোগীরা আরো দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।