
শাহরিয়ার খান কৌশিক ॥
চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঢাকা রামপুরের নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত ২য় আসামী রূপলাগী বিউটি পার্লারের ছলনামই নারী সোহেলী সুলতানা স্বপ্নাকে আটক পর বুধবার আদালতে প্রেরণ করা হয়। সংশিষ্ট আদালতে আগামী ৫ দিনের মধ্যে হাজির হওয়ার শর্তে স্বপ্না জামিন মঞ্জুর করেছেন চাঁদপুর আদালত। তাকে ছেড়ে দেওয়ায় জনমনে প্রশ্ন শর্ত নাকি অন্যকোন রহস্য।
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হয়ে দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর চাঁদপুর মডেল থানার এসআই আবু সাইদ ও এ এস আই জাহানারা কৌশলে শহরের মীর শপিং কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলা থেকে ঢাকা ও চাঁদপুরের রহস্যময়ী সুন্দরী নারী সোহেলী সুলতানা স্বপ্নাকে রাতে পুলিশ আটক করে।
জান যায়, এই নারী ১৪ পুরুষকে বিয়ে করা রূপলাগী বিউটি পার্লারের মালিক স্বপ্না মানুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার ছলনা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঢাকা ও চাঁদপুরে বেশ কয়েকটি ঘটনা থলের বিড়ালের মত বেড়িয়ে আসার পর ছলনামহী স্বপ্নার আসল রূপ মানুষের কাছে প্রকাশ পায়। ২০১৪ সালের মোহাম্মদপুরের সুমি আক্তার নামের এক অবলা নারীর স্বামী মিজানুর রহমান মানিকের সাথে পরকিয়ার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। কিছু দিন যাওয়ার পর মিজানের কাছ থেকে তার সর্বস্ব লুট করে পালিয়ে আসে। সেই ঘটনার পর সুমি আক্তার বাদি হয়ে রামপুর থানায় স্বামী মিজানুর রহমানকে ১ নাম্বার আসামী ও পরকীয়া প্রেমিকা সোহেলী সুলতানা স্বাপ্নাকে দুই নাম্বার আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী করে মামলা করে। সেই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হলেন স্বপ্না।যার ওয়ারেন্ট নং ৩৯৫ (১৪), অবশেষে পুলিশ ওয়ারেন্ট বলে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। স্বপ্নাকে আটকের পর শহরে এই নিয়ে আলোচনার ঝড় বইতে থাকে। সকলের একই প্রশ্ন কে এই রহস্য ও ছলনামই স্বপ্না। যাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার শহরের কিছু ব্যবসায়ী ও ছাত্রনেতাসহ ছদ্দবেশী লোকের চাঁদপুর মডেল থানায় ও আদালতে পদচারন লক্ষ করা যায়। স্বপ্নাকে আটকের পর চাঁদপুরের অনলাইন পত্রিকা চাঁদপুর নিউজ সহ কিছু দৈনিক পত্রিকা গুলোতে প্রকাশ হওয়ায় তা বিস্তারিত জানতে শহরের লোকজন পত্রিকা কিনতে দোকানে ভীড় জমায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর ছাড়াও বিভিন্ন জেলা গুলোর ছেলেদের সাথে রহস্য জনক সম্পর্ক রয়েছে। স্বপ্না নড়াইল জেলার সদর উপজেলার বাঁস গ্রামে ইউনিয়নের মেয়ে। সে দুই ভাই ও তিন ভোনের মধ্যে স্বপ্না ছোট। তার সুন্দর চেহারাকে অপব্যবহার করে মানুঘের সাথে প্রতারনা করে আসছে। বীত্তবান লোকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে সুযোগ বুঝে বিয়ে করে স্বামীর কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে অথ্য হাতিয়ে নেয়। এরপরই স্বামী ছেড়ে অন্য পুরুষের সাথে প্রেমে লিলÍ হয়। ১৯৯২ সালে পড়াশুনা করা ৭ম শ্রেণীতে পড়া শুনা করা অবস্থায় একই গ্রামের ছেলে বিমান বাহীনির এস এম হান্নানের সাথে প্রথম বিয়ে হয়। প্রথম ঘরের শাওন নামে একছেলে বর্তমানে ঢাকায় প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়া শুনা করছে। প্রথম স্বামী থাকা অবস্থায় তার বাসায় ছেলেকে প্রাইভেট পড়াতো চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মাহফুজ (সন্তানের শিক্ষক) শিক্ষককের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক করে স্বামীর কাছ থেকে র্স্বশ লুটে নিয়ে চাঁদপুর এসে আদালত পাড়ায় সর্ব প্রথম রূপলাগী বিউটি পার্লার দিয়ে ব্যবসা শুরু করে স্বপ্না। মাহফুজকে বিয়ে করার পর অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলায় মাহফুজকে ত্যাগ করতে চাইলে মাহফুজ রাজি না হয়ে এর পরিণত হিসেবে স্বামী মাহফুজের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তার পর তৃর্তীয় স্বামী চাঁদপুর পৌরসভার ট্যাক্স এস্টেন্ড অফিসার শাহরিয়ার। ৪র্থ স্বামী চাঁদপুর সদর থানার সাবেক এস আই খুলনার মামুণ। পঞ্চম ব্যবসায়ী খালিদ মাহমুদ সোহেল। ছষ্ঠ ব্যাবসায়ী আশরাফুল আলম। এভাবেই একের পর এক ছলনার ফাদে ফেলে আরেক জনের স্বামীকে বিয়ে করে স্ববর্শ লুটে নিয়ে ১৪ জনকে ত্যাগ করার তথ্য মিলেছে। অবশেষে ঢাকায় নারী নির্যাতন মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হয়ে আটক হয়েছে। পুলিশ তাকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করার পর তার জামিন হওয়ায় জনমোনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রতারাক ছলনামহী সোহেলী সুলতানা স্বপ্নার উপযুক্ত বিচার হবেকিনা এই আশঙ্খায় করছে ভুক্তভুগিরা।
একটি সূত্র থেকে জানা যায় স্বাপ্নার বিরুদ্বে ঢাকায় আরো বেশ কয়েকটি প্রতারানা মামলা রয়েছে। সে চাঁদপুর আত্মগোপনে থেকে মির শপিং এর দ্বিতীয় তলায় একটি রূপলাগী বিউটি পার্লার ও কোটি টাকার বিনিময়ে একটি ঝীম সেন্টার খুলেছে। ভুক্তভোগীরা মনে করছেন এই প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রতারনার ফাঁদ হিসেবে গড়ে তোলেছে। প্রভাবশালী ও বিত্তবানদের প্রলোভনে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে।
