যুগে যুগে বহু ইতিহাস রচিত হয়েছে প্রেম ভালোবাসার জন্য। আমরা জানি তাজমহলের কথা ,হেলেন অব ট্রয় নাগরী ও ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র কথা । ভালোবাসার শক্তি এত বেশী যে প্রেমিক/প্রেমিকারা তাদের জীবন অকাতরে উৎসর্গ করতে পিছ পা হয় না। নাম না জানা বহু যুগল আত্মাহুতি দিয়েছে, যা ইতিহাসের পাতায় লেখা নেই। এই ভালোবাসা পেতে সবাই অস্থির। কে না চায় ? কিন্তু সব প্রেম,ভালোবাসা কি পূর্ণতা পায় ? না,পায় না। তাহলে ভালোবাসা দিবসের সাথে সাথে “বিরহ দিবস” থাকবে না কেন?
বর্তমান যুগ আধুনিক প্রযুক্তির যুগ। ঘরে বসে এখন আমরা বিশ্বের যে কোন প্রান্তে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারি ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তাই বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম তাদের জীবন সঙ্গীটি অনায়াসে খুঁজে নিতে পারে তাদের পছন্দ মত। ফলে জড়িয়ে যায় প্রেম /ভালোবাসায়। কিন্তু তাদের প্রেম স্থায়ী হচ্ছে না এ ক্ষেত্রে অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছে, যারা সফল তারা ভাগ্যবান। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে অনেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবার পরিজন ও বন্ধুদের থেকে। বিপথে পা বাড়ায় কেউ কেউ। আবার অনেকে সত্যিকার ভাবে ভালোবেসেও পছন্দের মানুষটিকে পায়নি। পুরাপুরি ব্যর্থ।
বহু কবি,সাহিত্যিক,গল্পকার,গীতিকার উপন্যাসিক প্রেম/ভালোবাসা বিরহ নিয়ে তাদের ক্ষুরধার লিখনি লিখে গেছেন। ব্যর্থ প্রেমিক/প্রেমিকাদের মন জগতে বিরহের গান,কবিতা,গল্প গুলো ঠাই করে নেয় অনায়াসে। আর যারা ভালোবাসার ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন তাদের জীবন সার্থক।
খোঁজ নিলে দেখা যাবে পৃথিবীতে প্রেম/ভালোবাসার ক্ষেত্রে সফল মানুষের চাইতে ব্যর্থ মানুষের সংখ্যাই বেশী। এমন মানুষ খোঁজে পাওয়া দুষ্কর যে জীবনে প্রেমে পড়েনি, প্রিয়/প্রেয়সীর হাত ধরেনি, কাউকে ভালোবাসেনি। কিন্তু সেই আপন দুজন মানুষের একজন যখন স্বার্থের কারণে কিংবা সামাজিক বা পারিপার্শ্বিক ও পারিবারিক অবস্থার কারণে দূরে সরে গেছে তখনি অপর জনের জীবনে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা। এ ক্ষেত্রে কেউ আত্মহত্যার করে, কেউ নেশার জগতে হারিয়ে যায়, আবার অনেকে বিরহের কষ্টে জ্বলে পোড়ে ধূপের মত।
আবার প্রেম করে ভালোবেসে বিয়ে করার পর ও অনেকের ঘর টিকে নি। ভেঙ্গে গেছে পার ভাঙ্গা নদীর মত! যেন কোন এক জলোচ্ছ্বাস এসে সেই ঘর তছনছ করে দিয়ে গেছে। অনেকের জীবনে যশ খ্যাতি প্রতিপত্তির অভাব নেই; কিন্তু ভালোবাসার মানুষটি পাশে নেই, বিপর্যস্ত হয়ে বিরহের আগুনে জ্বলে। অথচ ভালোবাসা দিবস আছে কোন বিরহ দিবস নাই! তাই আমি নিজ উদ্যোগে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিরহ দিবস ঘোষণা করলাম। এই দিবসকে সামাজিক ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানাই সকলকে।
এখন থেকে প্রতি বছর ১৬ই ফেব্রুয়ারি হোক “বিরহ দিবস”।
লেখকঃ এম আর ফারজানা (ব্লগার, ফেইসবুকার ও প্রবাসী লেখিকা)