ইপিআই কার্যক্রমে হাম রুবেলা ক্যাস্পেইন-২০২০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা
অ্যাডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘মুজিববর্ষে স্বাস্থ্য খাত, এগিয়ে যাবে
আরেক ধাপ’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার
কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় এবং চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন
কার্যালয়ের আয়োজনে গত ৩ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জেলা সিভিল সার্জন
কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জামাল উদ্দিন। তিনি হাম ও রুবেলার ভয়াবহতা তুলে ধরে
বলেন, এ সম্পর্কে জনগণকে যদি আমরা সচেতন করতে পারি তাহলেই এর সফলতা আসবে। এ
সম্পর্কে প্রিন্ট মিডিয়াসহ সোস্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে হবে এবং
জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বেশি বেশি প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। অনগ্রসর
এলাকার প্রতি বেশি করে নজর দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, সরকার অত্যন্ত
সচেতনতার সাথে স্বাস্থ্যখাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারের ইচ্ছা জনগণকে শত
ভাগ স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা। এ ব্যাপারে সরকারের গৃহীত সকল কার্যক্রমে
আমাদের সহযোগিতা করা প্রয়োজন। হাম ও রুবেলার ভয়াবহতা যদি আমরা জনসম্মুখে
তুলে ধরতে পারি তাহলে সাধারণ মানুষ তা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে
নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবে।
চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহর সভাপ্রধানে স্বাগত
বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা
বেগম পলিন, বক্তব্য রাখেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ
ইলিয়াছ, এএসপি সার্কেল মোঃ আহসান হাবিব, জেলা বিএমএ সভাপতি ডাঃ মোঃ নূরুল
হুদা, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহমুদুন্নবী মাসুম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ
সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ অলিউর রহমান মজুমদার প্রমুখ। মাঠ পর্যায়ে
কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীদের অনেকেই স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে ক্যাম্পেইন
পরিচালনা করতে গিয়ে তারা কওমী মাদ্রাসা কর্তৃক বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে
ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা তা নিরসনে সিভিল সার্জনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন। এ ক্ষেত্রে তারা মমিনপুর মাদ্রাসা,
জাফরাবাদ মাদ্রাসার নামও উল্লেখ করেন। বক্তাগণ সরকারের গৃহীত এ সকল
কার্যক্রম পরিচালনায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ক্যাম্পেইনের সময়সূচি শুক্রবার
জুমার নামাজের পূর্বে যাতে মসজিদের মাইকে প্রচার করা যায় সে ব্যাপারে
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্যেও কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
সভা পরিচালনা করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আশ্রাফ আহম্মদ চৌধুরীর। সভার শুরুতে প্রজেক্টরের
মাধ্যমে হাম ও রুবেলার সার্বিক চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ডাঃ মালিয়া
পারভিন। আগামী ১৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে এ
ক্যাস্পেইন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। প্রথম পর্ব ১৮ মার্চ হতে ২৪ মার্চ
পর্যন্ত যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪র্থ শ্রেণী বা সমমান পর্যায় পর্যন্ত
ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। সে সকল প্রতিষ্ঠানে এমআর (হাম রুবেলা) টিকা দান
ক্যাম্পেইন চলবে। পরবর্তী ২৮ মার্চ হতে ১১ এপ্রিল ২য় ও ৩য় সপ্তাহে নিয়মিত
স্থায়ী ও অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্রে যেসব শিশু স্কুলে যায় না কিংবা স্কুলে
টিকাগ্রহণ করে নাই, তাদেরকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে টিকাদান কেন্দ্রে
প্রাপ্যতা অনুযায়ী ১ ডোজ এমআর (হাম রুবেলা) টিকা প্রদান করা হবে। ৯ মাস
থেকে শুরু করে ১০ বছরের কমবয়সী সকল শিশুকে ১ ডোজ এমআর (হাম রুবেলা) টিকা
গ্রহণ করতে হবে। যারা পূর্বে হামের টিকা বা এমআর টিকা পেয়েছে বা হাম বা
রুবেলা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরকেও এ টিকা গ্রহণ করতে হবে।