আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থান ও ভোটের সব সরঞ্জাম থাকারও এসব কেন্দ্রে ভোট দিতে কেউই আসেনি।
ভোটের সব আয়োজন ছিল,ছিল না শুধু ভোটার। রোববার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪৭টি আসনে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি আসনের অন্তত ৪২টি কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। দিনভর ভোটারের অপেক্ষায় থাকার পর শূন্য ভোটবাক্স নিয়ে ফিরতে হয়েছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থান ও ভোটের সব সরঞ্জাম থাকারও এসব কেন্দ্রে ভোট দিতে কেউই আসেনি।
লালমনিরহাট-৩ আসনে সর্বোচ্চ ২৬টি কেন্দ্র ছিল ভোট শূন্য। রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত এ সংখ্যা পাওয়া যায়। সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শূন্য না হলেও অনেক কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ১ থেকে ৩টি।
শূন্য ভোটের রেকর্ড
লালমনিরহাট-৩ আসনে হয়েছে ভোটার অনুপস্থিতির রেকর্ড। এ আসনের ৮৯টি কেন্দ্রের ২৬টিতে কোনো ভোটই পড়েনি। এছাড়া সদর উপজেলার বড়বাড়ি ও মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ৭টি করে কেন্দ্র এবং কুলাঘাট ও পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ৬টি করে কেন্দ্রে পড়েনি একটি ভোটও।
সহিংসতায় ভোটগ্রহণই করা যায়নি আরও ৪টি কেন্দ্রে। নিজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই করে তা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন বর্জনকারীরা।
সিলেট-২ আসনের বিশ্বনাথ উপজেলার রামদানা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও সারাদিনে একটি ভোটও পড়েনি। এ কেন্দ্রটি বিএনপির ‘নিখোঁজ’সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর জন্মস্থান। এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৯১০টি।
এছাড়া ভোটার উপস্থিতি কম ছিল জামায়াত অধ্যুষিত সাতক্ষীর-১ ও ২ আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতেও।
আমাদের প্রতিনিধির সরেজমিনে পাঠানো তথ্যানুযায়ী, দু’টি আসনে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ২৭৭ কেন্দ্রের মধ্যে চারটি কেন্দ্রই ছিল ভোট শূন্য। সদর উপজেলার গোদাঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে এক হাজার ৮৮৫ ভোটের মধ্যে একটি ভোটও পড়েনি।
এছাড়া আগরদাড়ি আমিনিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্র ও আগরদাড়ি মহিলা মাদারসা কেন্দ্রেও কোনো ভোট পড়েনি। আর শিয়ালডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র একটি।
নীলফামারী-১ আসনের গোমনাতি হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র একটি। এ আসনে ভোটের সংখ্যা তিন হাজার ৭৪৭।
জামালপুর-৪ আসনের সরিষাবাড়ী উপজেলার আরামনগর বাজার মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়,চর সরিষাবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়,শিশুয়া বাঘমারা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বলার দিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। এ চারটি কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৮৬ জন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম সমকালকে জানান,সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একজন ভোটারও ভোট দিতে আসেননি। তাই শূন্য ভোট বাক্স উপজেলা সদরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
রাজশাহী-৬ আসনের মারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রও ছিল ভোট শূন্য। দুই হাজার ৭৯৭ জন ভোটারের একজনও আসেননি ভোট দিতে। কেন্দ্রে ছিলেন না দুই প্রার্থীর পোলিং এজেন্টও।
বগুড়া-৭ আসনের মালিপাড়া দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে দুই হাজার ১৫৯ ভোটারের কেউই ভোট দিতে আসেননি। একই আসনের রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র তিনটি।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর ও পুরন্দপুর ভোটকেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি।
বজরাপুর কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সমকালকে জানান,দুই হাজার ৫৪২ ভোটারের কেউই ভোট দেননি। শূন্য ব্যালট বাক্স সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়া রেড়া ইউনিয়ের দু’টি ভোটকেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান,রওশনিয়া দাখিল মাদরাসায় দুই হাজার ৩৩৮ ভোটারের কেউই ভোট দেননি। ভোট পড়েনি পার্শ্ববর্তী কল্যাণপুর সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও।
ফেনী-২ আসনের সোনাগাজী উপজেলার চরকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক হাজার ৬৩২ ভোট ও মাদরাসা কেন্দ্রে দুই হাজার ৩৮০ ভোটারের কেউই ভোট দেননি।
কক্সবাজার-৪ আসনের উখিয়ার হরিণমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক হাজার ৫৯৫ ভোটারের কেউই ভোট দেননি।
=== সূত্র সমকাল