মিজান লিটন=
আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতকাল ১৩ ডিসেম্বর ছিলো মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিনে জেলার ৫টি আসনের মধ্যে ২টি আসনে ২জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন । আর ১জন প্রার্থীর হলফনামায় অসঙ্গতি থাকায় কমিশন কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। যার ফলে জেলার ৫টি আসনে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় এককভাবে আওয়ামী লীগের মনোনীত ৫জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২ ডিসেম্বর সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিলো। আর ৪, ৫ ও ৬ ডিসেম্বর ছিলো যাচাই-বাছাইয়ের নির্ধারিত দিন। গতকাল ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার ছিলো মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন পর্যন্ত চাঁদপুর জেলার ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত ৫ জন, জাতীয়পার্টি থেকে ৩জন ও স্বতন্ত্র থেকে ২জনসহ মোট ১০জন সংসদ সদস্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে চাঁদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী ও অ্যাডঃ ইকবাল বিন বাশারের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এদিকে জাতীয়পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ প্রধান বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না এমন ঘোষণা দিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক চাঁদপুরে জাতীয়পার্টির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে চাঁদপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এমরান হোসেন মিয়া, চাঁদপুর-৪ আসনে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানু ও চাঁদপুর-৫ আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য খোরশেদ আলম খুশু দলীয় মনোনয়ন জমা দেন।
জাতীয়পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশে চাঁদপুর-২ আসনের এমরান হোসেন মিয়া ও চাঁদপুর-৫ আসনের খোরশেদ আলম খুশু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জানান। আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা রিটার্নিং অফিসার তাদের আবেদনপত্র গ্রহণ করেন। আর চাঁদপুর-৪ আসনের প্রার্থী মাইনুল ইসলাম মানু নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র কমিশন কর্তৃক বাতিল হয়ে যায়। যে কারণে তার আর প্রত্যাহারের আবেদন করার প্রয়োজন হয় না।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যানারে জাতীয়পার্টি সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সচিব মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী প্রার্থীতা প্রত্যাহারের আবেদন জানান নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই। একইভাবে বিএনপি নেতা ও চাঁদপুর জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ ইকবাল বিন বাশার প্রত্যাহারের আবেদন জানান নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে। তাদের দু’জন প্রত্যাহারের আবেদন জানালেও মনোনয়ন যাচাই বাছাইকালে মনোনয়নপত্রে দেয়া নির্দিষ্ট শর্তাবলী পূরণ না হওয়ায় প্রার্থীতা বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে চাঁদপুরের ৫টি আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন চাঁদপুর-১ আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, চাঁদপুর-২ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, চাঁদপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি, চাঁদপুর-৪ আসনে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া ও চাঁদপুর-৫ আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম।
এ ৫টি আসনে একমাত্র আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা ব্যতীত অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় গতকাল জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন চাঁদপুরের ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের ৫জন প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এমপি পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর-১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন পর্যন্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ব্যতীত অন্য কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি। যার ফলে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি যে নির্বাচিত হচ্ছেন এ বিষয়টি পূর্ব থেকেই জেলাবাসীর জানা ছিলো। সর্বশেষ গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে জেলার ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলায় তাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেলো।
গতকাল চাঁদপুর জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন তাঁর সভাকক্ষে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করার সময় চাঁদপুর জেলার ৫টি আসনের মধ্যে একমাত্র চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁর সাথে তাঁর নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিরোনাম:
সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।