মিজান লিটন ॥
টানা ২২ দিনের ইলিশের অভয়াশ্রম শুরু হয়েছে। চাঁদপুরের জেলেরা এখন নদী থেকে ডাঙ্গায় এসে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিবছর এই সময়টাতে ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সরকার চাঁদপুর সহ দেশের ৩৭ জেলায় ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। যাতে করে সকল জেলে ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুদ থেকে বিরত থাকে। এই সময়ে মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, কোষ্ট গার্ড মিলে টাক্সফোর্স গঠন করে সার্বক্ষনিক নদীতে অভিযান পরিচালনায় নিয়জিত থাকে।
সরোজমিনে দেখা যায়, অভয়াশ্রমের প্রথম দিনে চাঁদপুরের হানারচর ইউনিয়নের হরিনা এলাকায় শত শত জেলেরা দলবদ্ধ ভাবে ডাঙ্গায় বসে তাদের ইলিশ ধরার জন্য গুল্টি জালগুলো মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছে। আবার কেউ কেউ জাল শুকিয়ে নৌকায় মজুদ করে যতœ করে রাখতেছে। অভয়াশ্রম শেষ হলে যাতে তারা পরিপূর্ণ ভাবে আবার নদীতে মাছ শিকারের জন্য নামতে পারে সে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে।
এ সময় আহসান গাজী, ফারুক গাজী সহ হরিনা এলাকার বেশ কয়েকজন জেলে জানায়, আমরা অভয়াশ্রম চলাকালীন সময়ে এই গুল্টি জাল নিয়ে কখনই নদীতে নামি না এবং নামবোওনা। কিন্তু কিছু অসাধু জেলেরা রয়েছে যারা কারেন্ট জাল ও ছান্দি জাল ব্যবহার করে তারাই এ সময় নদীতে নামে। অভয়াশ্রম চলাকালে সরকার যে পরিমান সাহায্য সহযোগীতা আমাদের জেলেদের দেয় তা আমাদের হয় না। তাছাড়া যাও দেয় তাও আমরা সঠিক ভাবে পাইনা। তাই সংশ্লিষ্ট উদর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি যাতে করে এ সময়টাতে আমাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে যে অনুদান দেওয়া হয় তা যেন একটু বৃদ্ধি করে সঠিক ভাবে জেলেদের মাঝে বন্ঠন করা হয়।
এ ব্যপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকীর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, চাঁদপুরে মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচরের কাটাখালি পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকা এ অভয়াশ্রমের অন্তর্ভূক্ত। আর এর মধ্যে ৫১ হাজার ১শ’ ৯০ জন জেলে রয়েছে। আমরা মৎস্য অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও কোষ্ট গার্ড সহ যৌথ ভাবে চারটি টিম দিনে রাতে এ অভয়াশ্রম এলাকায় অভিযান অব্যহত রাখবো। এমনকি নদীর তীরবর্তী এলাকায় জেলেদের মাঝে সচেতনতা মূলক প্রচারনাও চালাবো। যাতে কোন ভাবেই জেলেরা নদীতে না নামতে পারে, সে ব্যপারে সর্বাত্বক প্রচেষ্ঠা আমাদের অব্যাহত থাকবে।