দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর আজ রবিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে গণশুনানির আয়োজন করেছে বিইআরসি। গত ২১ নভেম্বর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়ানো হয়। একই মাসে গ্রাহক পর্যায়ে ২০ থেকে ২৩ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় ছয় বিতরণকারী কম্পানি।
বিইআরসির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়বেই, তবে সেটি যৌক্তিক পর্যায়ে থাকবে। তা ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে আশা করছি।’ যদিও গণশুনানিতেই দাম বৃদ্ধির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলেও তিনি জানান।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে সব ধরনের পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার বাজেট সহায়তা হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে। সেখানে আইএমএফ ভর্তুকি সংস্কারের জন্য বলেছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সরকার সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দেয়। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এবার গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো উচিত হবে না। লাইফ লাইন (৫০ ইউনিট পর্যন্ত) বা কম ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বাইরে রাখতে হবে। তা না হলে এসব গ্রাহকের ওপর চাপ আরো বেড়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এতে কৃষি উৎপাদনে অবশ্যই ব্যয় বাড়বে। তাই সেচের সময় ভর্তুকির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যেমন—জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে সেচ মালিকদের তালিকা করে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ ভর্তুকি হিসেবে দিতে হবে, যাতে তাঁরা পানির মূল্য না বাড়ান। এতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কৃষি উৎপাদনে পড়বে না।
ম. তামিম বলেন, ‘১০ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ালে শিল্পে পণ্য উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়ার কথা না। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিতে পারেন। যার কারণে সরকারকে তদারকি জোরদার করতে হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছিল ১০৩.৭৭ শতাংশ। গ্রাহক পর্যায়ে সর্বশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে সময় বাড়ানো হয় ৫.৭৭ শতাংশ।