তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মুসল্লি এখন অবস্থান করছেন টঙ্গীর তুরাগতীরে। এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দান মুসল্লিদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আজ বাদ ফজর থেকে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
গত দুদিন বৃষ্টি হলেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, ট্রাক, ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। ইজতেমাকে সফল করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গতকাল বাদ আসর থেকে মুসল্লিদের উদ্দেশে প্রস্তুতিমূলক বয়ান দেয়া হয়েছে। এতে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের তিনদিন অবস্থানের নিয়মকানুন সম্পর্কে বলা হয়। রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৯ ফেব্রুয়ারি।
আজ দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে। এতে প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি এ বৃহৎ জুমার নামাজে শরিক হবেন। এরই মধ্যে অনেকে টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় অবস্থান নিচ্ছেন। প্রথম পর্বের ইজতেমায় গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৩৬টি দেশের আট শতাধিক বিদেশী মুসল্লি ময়দানে এসে উপস্থিত হয়েছেন বলে ইজতেমা সূত্রে জানা গেছে। এদিকে ইজতেমা মাঠে অসুস্থ হয়ে গত দুদিনে তিন মুসল্লির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ইজতেমা মাঠের মুরব্বি প্রকৌশলী আব্দুর নূর জানান, ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের অবস্থান, রান্নাবান্না করার স্থান, টয়লেট, অজুখানা, গোসলখানা সবই সুনির্দিষ্ট করা থাকে।
এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী জানান, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে ১৭টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। বেশির ভাগ আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশনে থামবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের অজু, পয়োনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে নিরাপত্তায় র্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ছয় হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন কমিশনার মো. মাহাবুব আলম। তিনি বলেন, ‘উন্নতি প্রযুক্তির ক্যামেরা ব্যবহার করে বিভিন্ন যানবাহনের গতিবিধি মনিটর করা হচ্ছে।’
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক কর্মকাণ্ড সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে কাজের সমন্বয় করে জেলা প্রশাসন। আমরা ইজতেমা ময়দানে যা যা প্রয়োজন সব সম্পন্ন করেছি।’