শাহারাস্তিতে এক অসহায় বৃদ্ধ মা-বাবাকে শারীরিক নির্যাতন ও তাদের বরণ পোষণ না দেওয়ায় সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ তার স্ত্রী’র বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৃদ্ধ পিতা মিন্নত আলী। অভিযুক্তরা হলেন, ছেলে নূরুল আমিন ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ১০নং টামটা ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মজিদ হাজী বাড়িতে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দিন মজুর মিন্নত আলীর ১ ছেলে ৪ মেয়ে। মিন্নত আলীর ৫ ছেলে মেয়ের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিত ও অর্থশালী ছেলে নূরুল আমিন। নূরুল আমিনের পিতা মিন্নত আলী হাজীগঞ্জ আহমাদিয়া জুট মিলে চাকুরিকালীন সময়ে ছেলে নূরু কে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। ছেলে নূরুল আমিনকে সেনা বাহিনীতে চাকুরি যোগদান করে। এরপর ছেলেকে উৎসবের মাধ্যমে শাহ্রাস্তি উপজেলার কাজিরকাপ গ্রামে বিবাহ করান। ছেলের ওই স্ত্রী প্রসব ব্যথায় মৃত্যু হয়। এর কয়েকদিন পর ছেলেকে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৮নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাড়িতে ২য় বিবাহ করান। সেনা কর্মকর্তা নূরুল আমিনের ২য় স্ত্রী পছন্দ না হওয়ায় বাবা মিন্নত আলী’র ১৮ শতক ভূমি বিক্রি করে তার বউকে বিদায় করে দেয়। আবারও কয়েক মাস পর সেনা কর্মকর্তার পছন্দনুযায়ী তার নিজ এলাকার মেহের সেনগাঁ দোয়ানী গ্রামের ইদ্রিছ মিয়ার মেয়ে জেসমিন আক্তারকে বিয়ে করে। এ সাবেক সেনা কর্মকর্তা ৩য় বিয়ে করার পরই স্ত্রী জেসমিন আক্তারের কু-পরামর্শে পিতা ও মাতার উপর শারীরিক নির্যাতন করে আসছে। এমনকি ছেলের বউয়ের পরামর্শে নূরু পিতাকে ধোঁকা দিয়ে ২৪ শতক ভূমি সাব রেজিষ্ট্রি করে নেয়। তখন মিন্নত আলীর সাথে ছেলে নূরুর কথা ছিল সেনা বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর ৩ লাখ টাকা পিতাকে দিবে। কিন্তু এ টাকা চাওয়া ছেলে ও তার বউ বিভিন্ন সময় মা-বাবাকে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং নিষ্ঠুর ছেলে মা-বাবার বরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে মিন্নত আলী পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর তাগিদে বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ঘুরে দাঁতের খুচনি, কড়ি ও বাতের রাবার বিক্রি করে আসছে।
মিন্নত আলী চাঁদপুর বার্তাকে বলেন, ছেলে আমাকে ধোঁকা দিয়ে সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। এর পরও ছেলে ও তার বউ শারীরিক নির্যাতন চালায়। এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে আমাদের বরণ পোষণ বন্ধ করে দেয়। এ থেকে বাঁচার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। ইউএনও অভিযোগটি তদন্তের জন্য শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ প্রসঙ্গে তদন্তকারি কর্মকর্তা মাছুম রানার মোবাইল ফোনে আলাপ করলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। থানায় এসে বিবাদীদেরকে নোটিশ দেওয়ার পরও উপস্থিত হয়নি। এর মধ্যে হরতালের কারণে আর বসা হয়নি। তবে ইতিমধ্যে বসার ব্যবস্থা করতেছি।
এদিকে ভুক্তভোগী মা বাবা ছেলে ও ছেলের বউয়ের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য এবং তাদের বরণ পোষণ পাওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ২০ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।