মিজানুর রহমান রানা এম এ আকিব,
এক কেজি ইলিশের ডিমের দাম মাত্র ৮শ’ টাকা! ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ধরা এই ইলিশের ডিম রেফ্রিজারেটরে রেখে ওরা এখন সেই ইলিশের ডিম চড়া দামে বিক্রি করছে। আর মা ইলিশ রক্ষা বিষয়ে সরকারি সব লম্ফজম্ফ গেছে জলে।
সরকার ঘোষিত ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর ছিলো মা ইলিশ প্রজননের প্রধান মৌসুম। ফলে এই ১১দিন পদ্মা-মেঘনায় সকল প্রকার জাল ফেলা ছিলো নিষিদ্ধ। এই ১১দিনে চাঁদপুর মৎস অধিদপ্তর, কোষ্টগার্ড, নৌ-বাহিনী, নৌ-পুলিশ ও জেলা টাস্কফোর্সসহ প্রশাসনের মোট ৭টি ইউনিট মা ইলিশ নিধন বন্ধে অভিাযান পরিচালনা করে। এতে গত ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় মোট ৫৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এ সময় ১০৯টি অভিযানে ৪.১৯৪ মে. টন মা ইলিশ আটক করা হয়। পাশাপাশি জব্দ করা হয় ৪০.২৩০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল। যার আনুমানিক মূল্য ৮০ হাজার ৪ ৬০ টাকা। আটক মাছ গুলো এতিম খানা ও গরিব-দুস্থদের মাঝে বিতরণ ও জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। অভিযানে মোট ১৩৫ জন জেলেকে আটক করে ১১জনকে ২ বছর, ৮৮জনকে ১ বছর এবং বাকি ৩৬জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। এছাড়াও এদের কাছ থেকে সের্বমোট ৩ লাখ ২২ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আর মামলা দেওয়া হয়েছে ২১৬টি।
এতোকিছুর পরও সরকার কতটুকু সফল হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। যে মা ইলিশের ডিম রক্ষার জন্য সরকারের এতো আয়োজন সেই মা ইলিশের ডিম চাঁদপুর মাছঘাটে ৮শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে চাঁদপুর মাছ ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নিষিদ্ধ সময়ে ধরা মা ইলিশ গুলো স্তুপ করে রাখা হয়েছে। সরকার ঘোষিত মা ইলিশ রার অভিযান শেষ হওয়ার পর চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছ ঘাটের ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ইলিশ কেটে লবণ দিয়ে লোনা তৈরিতে। এসব মাছের অধিকাংশই পঁচে গেছে। আর এসব পঁচা ইলিশের পেট কেটে বের করা হচ্ছে ডিম। ডিমগুলো প্লাস্টিকের বক্সে করে পাঠানো হচ্ছে চট্রগ্রামে। প্রতিটি বক্সে থাকে আড়াই কেজি ডিম। যার প্রতি কেজি ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলার এক শেনির ক্রেতারা এসব মা ইলিশের ডিম কিনতে প্রতিদিন মাছ ঘাটে ভিড় জমাচ্ছে।
মাছ কেটে লবণ দেয়া ও মাছের পেট থেকে ডিম বেরকরার জন্য জামালপুর জেলা থেকে আসা ৫০-৬০জন লোক বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মাছ কেটে লবণ দিয়ে লোনা তেরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়াও চাঁদপুরের আরো ৩০-৪০জন নারী মাছ কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এদেরকে প্রতিদিন ৫শ’ টাকা করে হাজিরা দেয়া হয়। এরা গ্রুপভূক্ত হয়ে ৪জন নারী কমপে দিনে ২০মণ মাছ কাটছে। কমপে প্রতিদিন ৫০-১শ’ মন মাছ কেটে লবণ দেয়া হচ্ছে। জামালপুরের এক শ্রমিক জানান, এ লোনা ইলিশ জামালপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে প্রকার ভেদে ২শ’ থেকে ৭শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে। জামালপুর ও ময়মনসিংহে লবণ মাখা ইলিশে চাহিদা রয়েছে প্রচুর।
চাঁদপুর মৎস বনিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান কালু ভুইয়া জানায়, এই ইলিশ গুলো চাঁদপুরের নয় এগুলো সমুদ্র এলাকার মাছ। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধশীল হয়ে সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সময়ে চাঁদপুর মাছ ঘাটে সকল প্রকার কেনা-বেচা বন্ধ রেখেছি।
শিরোনাম:
রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।