খোরশেদ আলম শিকদার ঃ
চাঁদপুরের কচুয়ায় দুই দফায় বৃষ্টিতে কৃষকদের কাঙ্খিত হাজার হাজার টন আলু ফসল পঁচে গিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ গজবি তান্ডবে বহু কৃষক জমির কাছে গিয়ে হাউ-মাউ করে কান্না করে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ফসলের ওপর এতবড় দূর্যোগ হওয়া সত্বেও জেলা বা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কোন কর্মকর্তা গিয়ে তাদের শান্তনা,পরামর্শ বা সরকারী, কোন প্রকার সাহায্য পৌছায়নি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পূর্নবাসনের জন্য সুদমুক্ত ঋন দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায় গত ১৯,২৩ ও ২৪ ফেব্র“য়ারীর দুই দফা বৃষ্টিতে কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল আলু পানির নিচে ডুবে যায়। কৃষকরা অনেকে পানির ও কাঁদার নিচ থেকে আলু তুলে বাড়িতে নেয়ার পরও আলু পচে যায়। আবার অনেকে আলু ক্ষেতে গিয়ে ফেল ফেল করে তাকিয়ে নিরবে চোখের পানি ফেলে আবার অনেকে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে ও আল্লাহরে আমার কি হবেরে ? আমি আমার ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে খাব ? কোথায় যাবরে আল্লাহ ? কিস্তিতে টাকা তুলে আলু চাষ করেছি, ধার দেনা করে আলু চাষ করেছি এ টাকা আমি কিভাবে দিবরে আল্লাহ ? এসব বলে কৃষকরা কান্নাকাটি করছে। তাদের কান্নায় আহাজাড়িতে বাতাস ভারী হয়ে যায়। কৃষক ও তাদের পরিবারবর্গদের অনেকেই কিছুক্ষণ পরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।
কচুয়ার হরিপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে জমির হোসেন কিস্তিতে টাকা তুলে ও মানুষের নিকট থেকে ধারদেনা করে ৪ একর জমিতে আলু চাষ করেছে। ২/১দিন পরই আলু উঠানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্ত হঠাৎ মোষলধারে বৃষ্টিতে আলুর জমিতে হাটু পানি হয়ে আলু পঁচে যায়। এতে পায় ১০লাখ টাকার ক্ষতি হয়। জমির হোসেন কিছুক্ষণ পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।
হরিপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমান, কবির উদ্দিন মাষ্টার,নুরুল ইসলাম বেপারী,শহিদুল ইসলাম,কামাল হোসেন,সফিক মাষ্টার,স্বপন দর্জি,হানিপ শিকদার,জহিরুল ইসলাম,নজরুল ইসলাম শিকদার,ইলিয়াছ শিকদার,রশিদ শিকদার,মাঝিগাছা গ্রামের তৈমুর হোসেন তমু,চাঁনপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল,বকস্ আলী,ফজলুর রহমান,রফিকুল ইসলাম। বুধুন্ডা গ্রামের সহিদ ভূইয়া,সেলিম মেম্বার। বিতারা গ্রামের আব্দুল মবিন। শিলাস্থান,উত্তর শিবপুর,নিন্দপুর,কুন্ডপুর,যোগিচাপর বড়দৈল,পাথৈরসহ মতলব দক্ষিণ ও উত্তর উপজেলা,দাউদকান্দি উপজেলা,হাজিগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার কৃষকদের কাঙ্খিত আলু পানিতে ডুবে পঁচে গেছে।
তাদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে গেছে। তাদের চোখেমুখে এখন শুধু কান্না আর কান্না। কৃষকরা ক্ষোভ ও আক্ষেপ করে বলেছে ফসলের ওপর এতবড় দূর্যোগ হওয়া সত্বেও জেলা বা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে কোন কর্মকর্তা গিয়ে তাদের শান্তনা,পরামর্শ বা সরকারী,কোন প্রকার সাহায্য পৌছায়নি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পূর্নবাসনের জন্য সুদমুক্ত ঋন দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।