কচুয়া প্রতিনিধি
কচুয়া উপজেলার বাইছারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ হোসাইন (১২)-কে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সচেতন লোকজনের মাঝে তীব্র নিন্দা ও তোলপাড় দৃষ্টি হয়েছে। বাইছারা এলাকার লইয়া মেহের পাঁচধারা গ্রামের মোড়ল বশির মিয়াজী ও রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রকে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানোর এ অভিযোগ উঠে।
সরজমিনে জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্র“য়ারি মঙ্গলবার বিকেলে বাইছারা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদের ছেলে বাইছারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র হোসাইন অন্যান্য বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হলে ওই এলাকার মোড়ল বশির মিয়াজী ও রবিউল ইসলাম তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে আটকে রাখে। পরে মধ্য রাতে স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওঃ আবুল হাসানাতকে ডেকে এনে একই গ্রামের আমির হোসেনের বিবাহিতা মেয়ের সাথে কাবিন ছাড়াই জোরপূর্বক বিয়ে পড়িয়ে দেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, একটি কুচক্রী মহল ছেলের বাবা-মা যাতে আইনী সহায়তা না নেন এ জন্য তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও কুপরামর্শ দিচ্ছে এবং বিষয়টি সমাধান দেয়ার নাম করে একটি প্রভাবশালী মহল গত কয়েক দিন ধরে টালবাহানা করছেন।
স্কুল ছাত্র হোসাইনের মা খাদিজা বেগম, প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তার মুন্সী ও ইব্রাহীম মিয়া জানান, ঘটনার দিন হোসাইন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হলে আমির হোসেনের ঘরে তাকে আটকে রেখে নেশাদ্রব্য খাইয়ে মধ্যরাতে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ান। বাইছারা গ্রামের অধিবাসী উপজেলা যুবলীগের সদস্য মিজান সরকার বলেন, স্কুল ছাত্র হোসাইনকে বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি শুনেছি। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। বাইছারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, আমিও বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি শুনেছি। তবে কে-বা কাহার এ বিয়ে পড়িয়েছেন তা কিছুই বলতে পারেননি তিনি।
অভিযুক্ত বশির মিয়াজীর মোবাইলে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি স্থানীয় বিষয়। এব্যাপারে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করলে দলের বদনাম হবে। কোন দলের বদনাম হবে জানতে চাইলে বিষয়টি এরিয়ে যান তিনি। কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন বলেন, স্কুল ছাত্রকে বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি অমানবিক। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রকে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।