প্রতিনিধি=
কচুয়ায় সৎ মায়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে রুবেল (২৪) বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার নিহতের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কচুয়া থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মামলা নং-০১, তারিখ ২৩/১২/২০১৩ খ্রিঃ।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার ২নং পাথৈর ইউপির পদুয়া গ্রামের মফিজ মিয়া ২০০১ সালে তার ১ম স্ত্রীকে পেটে লাথি মেরে হত্যা করে। এ মামলায় সে জেলে যায়। পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মফিজ মিয়া পার্শ্ববর্তী গুতপুর গ্রামে নাছিমা আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সংসারে রুবেল ও মোজাম্মেল নামে ২ পুত্র রয়েছে। দাদা হাজ্বী মনু মিয়া এ দু� নাতিকে ৮৮ শতক জমি লিখে দেন। এ জমি বাবা মফিজ ও তাদের সৎ মা নাছিমার নামে লিখে দিতে বিভিন্ন সময় তাদের ঘরে ঝগড়া বিবাদ হতো। এক পর্যায়ে ছেলে রুবেলকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে রুবেলের নামীয় সম্পত্তি বাবা মফিজ নিয়ে নেয়। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে সৎ ২ পুত্রের সাথে অহরহ ঝগড়া করতো সৎ মা নাছিমা। শুধু তাই নয়, সৎ ছেলেরা যাতে ভাত খেতে না পারে সেজন্য সৎ মা ভাত রান্নার পর আলমিরায় তালা দিয়ে রাখে বলেও ছেলে মোজাম্মেল হোসেন জানান। ঘরে ঠিক মতো ভাত খেতে পারে না মা হারা এ দু� সন্তান। এ বিষয়ে বাবা মফিজ জেনেও তার ২য় স্ত্রীকে কিছুই না বলে বরং উল্টো রুবেল ও মোজাম্মেলকে বিভিন্ন সময় ধমকাতো। সৎ মায়ের এ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এবং বাবার কাছে কোনো বিচার না পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ঘরে থাকা কীটনাশক পান করে রুবেল। পরে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে দাউদকান্দির গৌরীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থা বেগতিক দেখে কর্মরত ডাক্তার তাকে কুমিল্লার কুচাইতুলী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে রুবেল চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাতে মারা যায়। পরে পিতা মফিজ ও তার পরিবার ময়না তদন্ত ছাড়াই রুবেলের লাশ তার গ্রামের বাড়ি পদুয়া গ্রামে দাফন করে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী নিহত রুবেলের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে তার ময়না তদন্ত দাবি করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম মিয়াজী বলেন, নিহতের বাবা মফিজুল ইসলাম তার ছেলে মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে আমার কাছে আসে। আমি তাকে থানা পুলিশের মাধ্যমে ময়না তদন্ত শেষে লাশ দাফনের পরামর্শ দিয়েছি।