মোঃ ইয়াছিন হোসেন সুজন :
আমরা বাসা, দোকান, ব্যাংক, সিন্ধুক ইত্যাদির নিরাপত্তার জন্য এক বা একাধিক তালা ব্যবহার করে থাকি। এ তালার সক্রিয়তার জন্য রয়েছে চাবি। প্রায়ই ভুলবশত হারিয়ে যায় এ চাবিটি। তখন মানুষকে হতে হয় দিশেহারা, কি করে তালাটি খুলবে। হয়তো অনেকে তালাটি ভেঙ্গে ফেলেন উপায় না পেয়ে। আর যিনি সন্ধান জানেন তালা-চাবির মেকানিকদের। তার আর থাকেনা চিন্তা।সে নিয়ে যান লক করা তালাটি, কিংবা তাদেরকে খবর দিয়ে নিয়ে যান বাসায়। বানিয়ে নেন আগের মত হুবুহু একটি চাবি।সেরে যায় তার চাবি হারানোর সব দুঃশ্চিন্তা। এরা শুধু তালা চাবি নিয়েই কাজ করেন না। এরা সামান্য টাকার বিনিময়ে ঠিক করে দেন আপনার হাতের ব্যবহার করা চার্জ লাইট, দিয়াশলাইট কিংবা ভাঙ্গা চিরা ছাতাটি। যে ছাতাটি গ্রীস্ম কিংবা বর্ষায় আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। এদের অনেকেই ঠিক করে দেন আপনার ব্যাবহার করা ভেঙ্গে যাওয়া চশমাটি।এসব রিপেয়ারিংকারীদেও বলা হয় তালা- চাবির মেকানিক। এদেরকে পূর্বে গ্রাম গঞ্জে কিংবা হাট বাজাওে শহরের আনাচে কানাচে প্রায়ই দেখা যেত। বাড়ির আঙিনায় এসে ডাক দিত ’আছে নি ভাঙ্গা ছাতা, নষ্ট তালা-চাবি। ঠিক করে দিমু চাচা, মামি………….। কিন্তু এখন আর তাদেরকে সচরাচর তেমন একটা চোখে পড়েনা। পুরো চাঁদপুর শহরের পালবাজারের সামনে রয়েছে মাত্র ৯ জন ও শহরের পুরান বাজার ট্র্যাংক পট্টি রোডে রয়েছে ৪জন তালা-চাবির মেকানিক। কিন্তু পূর্বে এর চাইতে অনেক বেশি সংখ্যক মেকানিক ছিল।আর গ্রাম গঞ্জে তো তাদের দেখাটা প্রায়ই বিরল হয়ে গেছে।
কেমন আছেন চাঁদপুরের তালা-চাবির মেকানিকরা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সরেজমিনে আলাপ হয় মেকানিকদের সাথে। শহরের পালবাজার এলাকায়ই তুলনামূলকভাবে এক সাথে চাঁদপুরের সর্বাধিক সংখ্যক মেকানিক কাজ করে। এখানে প্রশ্নটা ছুড়তেই সম্মিলিত উত্তর এল, ভাল নেই ভাই। তারা জানায়, কাজ এখন একে বারেই কম। দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। যা দিয়ে বউ বাচ্ছা নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করতে হয়। প্রতি বছরের বর্ষার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বর্ষার সময় ছাতার কাজ বছরের অন্যান্য সময়ের তলনায় বেশি হয়। কিন্তু অন্যান্য মাস গুলো চলতে কষ্ট হয়ে যায়। তাইতো এদের অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন এ মেকানিকগিরি। আবার অনেকেই পান না শ্রমের ন্যায্য মুজুরি। কারন মানুষ এগুলোর মজুরি দেয় অতন্ত কম। আর অনেকেই বা পুরোনো ভাঙ্গা জিনিসটি ঠিক করেন না। হয়তো বা মেকানিকদের অবস্থান সম্পর্কে জানেন না। আবার অনেকেই মূলধনের অভাবে টিকতে পারছেন না। এসব মেকানিকদের দাবি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা হয়ে উঠতে পারতেন আরও দক্ষ।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।