সাখাওয়াত হোসেন মিথুন :
হাজীগঞ্জে খামারিরা কোরবানির গরু বিক্রির অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। ইতোমেধ্য বাড়িতে বসেই অনেক খামারি কোরবানির গরু বিক্রি শুরু করেছেন। রোজার পর থেকেই উপজেলার হাটে হাটে এবং বাড়িতে বাড়িতে গরু ব্যাপারীদের পদচারণা শুরু হয়েছে। এবার এলাকায় বিপুল কোরবানির গরু রয়েছে। তবে গোখাদ্যের মূল্য এত বেশি যে, খামারিদের মাথায় হাত পড়েছে। প্রতিদিনই গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে খামারিরা দিশেহারা। গোখাদ্যের বাজারের কোনো রকমের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যে যেভাবে পারছে গোখাদ্যের মূল্য নিচ্ছে। উপায়না পেয়ে বাকি কয়েক দিনের জন্যই খামারিরা বাধ্য হয়ে বেশি মূল্যে গোখাদ্য কিনছেন। তার পরেও খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক- এবার কোরবানিতে গরুর বাজারদর তাদের অনুকূলে থাকবে কি না। এলাকার খামারি ও ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা ঈদের আগে ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে অবাধে গরু অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে না পারলে খামারিদের একেবারে পথে বসতে হবে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আকস্মিকভাবে দফায় দফায় কোনো ঘোষনা ছাড়াই গোখাদ্যের মূল্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় খামার মালিকেরা পড়েছেন বিপাকে। আসন্ন কোরবানি ঈদের আগে এ ধরনের একটি অবস্থায় খামার মালিকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শেষ মুহূর্তে এসে খামারিদের ঘরে ঘরে চাপা কান্না শুরু হয়েছে। গোখাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে খামারিরা বাকি দিনগুলোতে আরো আর্থিক ক্ষতির মধ্য পড়বেন বলে জানিয়েছেন। হাজীগঞ্জে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাংক থেকে চড়া সুদে হাজার হাজার টাকার ঋণ মাথায় নিয়ে হাজীগঞ্জের কয়েক শত গো-খামার গড়ে উঠেছে। কয়েক বছর ধরে এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় পারিবারিকভাবে গড়ে ওঠা এসব গো-খামার থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কোরবানিসহ বছরের অধিকাংশ সময় গোশতের চাহিদা মেটানো হয়। ফলে প্রতি বছরই গরু বেচাকেনার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এত বেশি দাম দিয়ে খাবার কিনে গরুকে খাওয়ানোর ফলে গতবারের চেয়ে এবার গরুর পেছনে ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। উপজেলার অলিপুর গ্রামের গোয়ালবাড়ীর খামার মালিক আলমগীর কবির জানান, গোখাদ্যের মূল্য নির্ধারণের কোনো বালাই নেই, যে যার মতো পারছে গোখাদ্য বিক্রি করছে। তিনি জানান, এবার বিচালির দাম কম তবে গমের ভুসি, ধানের গুঁড়া, চালের খুদ, ছোলার ভুসি ও খৈলসহ সব ধরনের ওষুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খৈলের দাম গত বছর ছিল ২১ টাকা কেজি, বর্তমান ৩৬ টাকা কেজি, গতবার বিচালি হাজার ছিল ২২ শ’ টাকা বর্তমান ১২ শ’ টাকা, চালের খুদ গতবার ছিল ২০ টাকা কেজি, এবার ২২টাকা কেজি, ছোলার ভুসি গতবার ছিল ২৬ টাকা কেজি, এবার ৪২ টাকা কেজি, গমের ভুসি গতবার ছিল ২০ টাকা কেজি, এবার ২৮ টাকা কেজি, খেসারি ভুসির দাম গতবারের চেয়ে অনেক বেশি।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ