স্টাফ রিপোর্টার:॥বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলার রায় ঘোষণার পর শহরের নতুন বাজার, প্রফেসর পাড়া, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর বহরিয়া বাজার ও হামইচর উপজেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাঁদানে গ্যাস ও কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে। এতে ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। সারা জেলায় পুলিশ বিএনপি-জামায়াতের ৩৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের নতুন বাজার মোড় এলাকায় শহর ছাত্রদলের সভাপতি ইসমাইল হোসেনের নেতৃতে বিএনপি’র কর্মীরা একত্রিত হয়ে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করে এ সময় ওই এলাকার যমুনা হাসপাতাল এর বাহিরের অংশের ৮ থেকে ১০টি গ্লাস ভেঙে যায়। পুলিশকে লক্ষ করে বিএনপির কর্মীদের ছোড়া ৬টি ককটেলের মধ্যে দুটি বিস্ফোরিত হলেও বাকী ৪টি পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
প্রত্যক্ষ দর্শিরা জানান, দুপুরে পুরানবাজার ৪নং ওয়ার্ড থেকে যুবদলের একটি মিছিল শহরের নতুনবাজার-পুরানবাজার সেতু সংলগ্ন পালবাজার-মোড়ে মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ কালে যানবাহন ভাংচুর করতে থাকে। তখন পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে পুলিশ ৪জন যুবদলেন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। এরা হচেছ,ছাত্তার মজুমদার,কামরুল ইসলাম সোহেল গাজী,শিমুল তালুকদার ও শাওন খান। বিকেল ৪টায় চাঁদপুর শহরের প্রান কেন্দ্র শপথ চত্বর এলাকায় সদর উপজেলা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা একটি মিছিল বাহির করলে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করে, ধাওয়া করলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা শহরের গুয়াখোলা এলাকা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কযেকটি সিএনজি ও আটোবাইক ভাংচুর করে। বিকেল পৌনে ৫টায় বিএনপির একাংশের নেতা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ভুঁইয়া তার দলবল নিয়ে নতুনবাজার এলাকায় শান্তিপূর্ন মিছিল করে এবং ছাত্রদল কর্তৃক ভাংচুরকৃত দোকান পাট পরিদর্শন করেন।
যমুনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুর রহমান জানান, বিএনপির কর্মীদের ইট পাটকেল নিক্ষেপের কারণে হাসপাতালে ব্যাপক ভাংচুর হয়। এতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিশেষ শাখা সূত্রে জানাযায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মতলব উত্তর থানা পুলিশ-৪, মতলব দক্ষিণ-৪, চাঁদপুর মডেল থানা-৯, ফরিদগঞ্জ -১৪, হাইমচর-১, শাহরাস্তি-১ ও কচুয়া থানা পুলিশ ১ বিএনপি-জামায়াত কর্মীকে গ্রেফতার করেন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উল্যাহ ওলি জানান, নতুন বাজার মোড়ে বিএনপির নেতা-কর্মীর বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশের আক্রমন চালায়। তবে পুলিশ ধাওয়া করে, ক্যাঁদানে গ্যাস ও কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়লে তারা পালিয়ে যায়। হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনোজিত রায় জানান, উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি কর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সম পুলিশ ২ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে এবং ৮টি অবিস্ফোরিত হাত বোমা উদ্ধার করে। এ সময় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিন উল্যাহ বেপারীকে গ্রেফতার করেন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম জানান, সারা জেলায় বড় ধরনের কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এছাড়া সারা জেলায় আইন শৃঙ্খলা অবস্থা ভাল রয়েছে। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার কোন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন।