শওকত আলী ঃ
চাঁদপুর শহরের সু-পরিচিত সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ি মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদুর রহমান চৌধুরী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড চাঁদপুর শাখার প্রায় সিকি কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। দীর্ঘ দিন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে ব্যর্থ হওয়ায় তার সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি দফায় দফায় সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লাফাত্তা হওয়ার পরিকল্পনা আঁটেন। ২০১৫ সালে শেষ বারের মতো ঋণ নবায়ন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত ৩১মার্চ ২০১৭ ইং তারিখে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আরোপিত ও অনারোপিত সুদসহ ব্যাংক পাওনা আছে ৩১ কোটি ৩৯লাখ ৪২হাজার ৬শ ৮২টাকা ৪২ পয়সা। যদিও নিলাম বিজ্ঞপ্তির অনুকূলে কেউ কোনো দরপত্র জমা দেয়নি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মূলত সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগীতায় মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিঃ এর বিপরীতে অন্তত পাঁচগুণ বেশি অর্থ লোন নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। এদের মধ্যে অগ্রগণ্য হলেন, সোনালী ব্যাংকের ২০১০ সালের ম্যানেজার আলী আহম্মেদ মিজি। যিনি বর্তমানে অবসরে আছেন। অথচ ঋণের বিপরীতে দেয়া বন্ধকিকৃত সম্পত্তির মূল্য পাঁচ কোটি টাকা হবে না। এছাড়া শাহিদুর রহমান চৌধুরী আত্মাগোপনে যাওয়ার আগে শহরের মিশন রোডস্থ নিজস্ব বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিঃ এর শেয়ারও বিক্রি করে দেয় সঞ্জয় কুমার রায় নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে। যিনি এখন মালিকানা জটিলতায় পড়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজের করে নিতে পারছেন না।
১৯ মে ২০১৭ তারিখে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মেসার্স সী ফুড করপোরেশন লিঃ এর হিমাগারে বিভিন্ন গ্রেডের হিমায়িত গলদা চিংড়ি আছে ২০হাজার ৬শ ৭৬ কেজি, বাগদা চিংড়ি আছে ৬হাজার ৫শ ১ কেজি, দুইটি রেফ্রিজারেটর কার্ভড ভ্যান, চান্দিনা ভিটি হালে ফেক্টরী আঙিনা একুনে পৌনে ছিয়াশি শতাংশ ভূমি ও তদস্থিত দালান গৃহাদি স্থাপিত যাবতিয় কলকব্জা, যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র ইত্যাদি সম্পত্তি রয়েছে। গত ১৪জুন ২০১৭ টেন্ডার বক্স খোলা হলেও কোনো দরপত্র পরেনি। দ্বিতীয় দফায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
এব্যাপারে সোনালী ব্যাংক এর এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মোঃ আবদুল মতিন বলেন, ব্যাংক তার সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে মামলা প্রক্রিয়ায় যাবে। তার আগে নিলাম সম্পন্ন প্রক্রিয়া চলছে। আমরা যেকোনো ভাবেই হোক ব্যাংকের টাকা উদ্ধারে চেষ্টা চলাবো।
সোনালী ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ডিজিএম মোঃ দেলোয়ার হোসেন আব্বাসী জানান, ঋণের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত আছে কী না? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা দিয়ে কয়েক দফায় তদন্তও করা হয়েছে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২০ জুন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৬ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।