সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের নাম শোনামাত্রই শরীর শিহরে উঠে। চালকরাও যেতে চায় না। অধিক ভাড়া গুণেও যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে কষ্ট হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি হচ্ছে চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সীরহাট-গল্লাক সড়ক। সড়কের বিভিন্ন স্থানের নামগুলো সুন্দর হলেও সড়কটি অসুন্দরে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিংসহ ইট পর্যন্ত উঠে গেছে। যার ফলে সড়কের মাটি ভেসে উঠে আসছে। বিশালাকার গর্তগুলোতে সিএনজি স্কুটারের চাকা পড়লে ধাক্কা মেরে উঠানো ছাড়া কোনো গতি-নেই। আর স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। চালকরা ভয়ে ভাড়া নিয়ে যেতে চায় না। একজন সুস্থ মানুষ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সড়কের এমনই নগ্ন চিত্র যা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। গ্রামের কাঁচা সড়ক এ সড়কের চেয়েও অনেক ভালো। অপরদিকে সড়কের দু পাশ ভেঙ্গে সরু হয়ে গেছে। যার ফলে একটি গাড়ি বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে রেখে কাত হয়ে সাইড দিতে হয়। সড়কের অনেকাংশে লম্বায় ১৫/২০ ফুট দৈর্ঘ্যে কার্পেটিং ও ইট উঠে যাওয়ার স্থান দিয়ে প্রতিদিন ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
আর এ সড়কটির নগ্নতার মূল কারণ হচ্ছে ট্রাক্টর। সারা বছরই মাটি, ইট, বালিসহ বিভিন্ন পণ্য বহনের কাজে যন্ত্রদানব ট্রাক্টর চলাচল করে দাপটের সাথে। যার ফলে সড়কটি দিন দিন ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে সড়কে চলাচল অযোগ্য বললেই চলে। সড়কের সাহেববাজার রাস্তার মাথা হতে গল্লাক পর্যন্ত এমনই অবস্থা বিরাজ করছে যার উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়াটাই বিপদজনক। সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করলে মুন্সীরহাট হতে গল্লাক পর্যন্ত সড়ক দখল করে ইট ব্যবসায়ীরা ব্রিকফিল্ডে ব্যবহারের বিভিন্ন মালামাল, ইটের সুরকি ও ইট রেখে সড়ক দখল করে রেখেছে। সড়কটি দিন দিন ধ্বংসের পথে চলে গেলেও সড়ক রক্ষার্থে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। জানা যায়, সড়কের বেহাল দশাও সিআইপি বাঁধ রক্ষার্থে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। আর যানবাহন চালকরা যাত্রী যাতায়াত বন্ধ করে যে কোনো সময় অনশন কর্মসূচিও দিতে পারে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গল্লাক এলাকার ক’ ব্যক্তি জানান, সড়কের দুরাবস্থার কারণই হচ্ছে ট্রাক্টর। ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হলেই সড়কটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। যাত্রী শহীদ, রফিক, লিটন, পারুল, জেমি জানায়, সড়ক অনেক ভেঙ্গে গেছে, বড় বড় গর্ত হয়ে পড়েছে। ধুলাবালি উড়ে জামা কাপড় ময়লা হয়ে যায়। আর চলাচল করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর ট্রাক্টরগুলো দ্রুত গতিতে চলাচল করে থাকে। ভয়ে ভয়ে চলাচল করি। কখন আবার দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ক’জন সিএনজি স্কুটার চালক জানায়, যাত্রীদের কষ্ট দেখে গল্লাক ও কামতা ভাড়া নিয়ে যাই। গাড়ির চাকা গর্তে পড়ে গাড়ি আটকা পড়ে থাকে। এতো বড় গর্ত আর কোনো সড়কে দেখিনি। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সড়কে গাড়িতো দূরের কথা পায়ে হেটে যাওয়াটাই কষ্টকর হবে। সড়কটি নষ্ট হওয়ার একমাত্র দায়ী ট্রাক্টর। হয়তো আমরা এ সড়কে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিতে পারি। আমাদের গাড়ির ক্ষতি হয়ে থাকে গর্তে পড়ে। ট্রাক্টর চালক ক’জন জানায়, স্যার আমগো নাম লেইখেন না। আমরা খেটে খাই। মালিকরা ভাড়া নেয়। আর আমরা গাড়ি চালিয়ে মালামাল দিয়ে আসি। স্যার আমাগো এসকল ট্রাক্টর না চললে সড়কের ক্ষতি হতো না।