ফাহিম শাহরিন কৌশিক খান
চাঁদপুরের পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌঁরাত্ব বেড়েই চরছে। সাধারণ মানুষদের ধোকা দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা। পাসপোর্ট কর্মকর্তার সাথে প্রতারণা করে চাঁদা চাইতে গেলে দু’ দালালকে আটকে রেখে গণধোলাই দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানায়, পাসপোর্ট অফিসে চিহ্নিত দালাল জিটি রোডের ভাড়াটিয়া টাইগার মোস্তফার পালিত ছেলে মুরাদ হোসেন মুসা, ফরিদগঞ্জ ৬নং গুপ্টির হামচাপুর গ্রামের বর্তমানে নাজির পাড়ার বাড়াটিয়া মৃত মমিন খলিফার ছেলে জসিম ওরপে মজিব চৌকিদার ও মতলব মুন্সীরহাটের জুবায়েরসহ বেশ কয়েকজন চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিসে দালালী করে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। গত রোববার দুপুর ১১টায় তাদের সহযোগী দালাল সাইফুলসহ দু’জন পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে। এ সময় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা জাহিদ ও ঘটনাস্থলে থাকা বেশ কয়েকজন লোক সাইফুলকে উত্তম মধ্যম দিয়ে বের করে দেয়। সাইফুল বের হয়ে গিয়ে তার সহযোগী দালাল মুরাদ হোসেন মুসা, জসিম ও জুবায়েরকে ঘটনাটি জানায়। এর কিছুক্ষণ পর তারা তিন দালাল বিভিন্ন সংস্থার নাম ভাঙ্গিয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তার কাছে গিয়ে উচ্চবাচ্চ স্বরে কথা বলে।
এসময় দালাল জসিম কলমের মধ্যে গোপন ক্যামেরা সাথে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বিভিন্ন দৃশ্য ধারণ করে এবং পাসপোর্ট কর্মকর্তাকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। পাসপোর্ট অফিসের স্টাফ জসিমের হাতে গোপন ক্যামেরা দেখে তার পরিচয় জানতে চায়। প্রতারক জসিম নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে পাসপোর্ট কর্মকর্তা চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করলে তার পরিচয় ভূয়া প্রমাণিত হওয়ার পর তাকে আটকে রাখে। ওই সময় ঘটনা ঘোলাটে দেখে তার সহযোগী মুরাদ হোসেন মুসা ও জুবায়ের ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আটক জসিমকে ধোলাই দিয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তা তাকে জেলা প্রসাশকের কাছে নিয়ে যায় এবং তার গোপন ক্যামেরাটি আটকে রাখে। জসিমকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তার মদদদাতারা ডিসি অফিসে গিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে তাকে ছাড়িয়ে আনে।
একটি সূত্র জানায়, পাসপোর্ট অফিসের এ তিন দালাল নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন সংস্থার নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে। এছাড়া দালাল মুরাদ হোসেন মুসা বরিশালের একটি মেয়েকে বিয়ে করার নাম করে এনে চাঁদপুর বাবুরহাট জেলখানার পাশে পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় রেখে পতিতা ব্যবসা করতো। কিছুদিন পূর্বে এলাকার মানুষ পতিতা খদ্দরসহ ওই বাসা থেকে আটক করে দালাল মুরাদ হোসেন মুসাকে বের করে দেয়। এছাড়া সে, কুমিল্লা থেকে চোরাই মোটরসাইকেল চাঁদপুরে এনে বিভিন্ন যুবকদের কাছে বিক্রিকরার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণা মামলার আসামী হওয়ায় চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য খুঁঁজছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।