রফিকুল ইসলাম বাবু ।
কাউকে কিছু জানালে অপহরণ করে নিয়ে শিশু পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেবে এমন হুমকির ভয়ে এবং লাজলজ্জায় ৬ দিন ধরে স্কুলে যাচ্ছে না তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীটি। বাবা দিন মজুর। উপরন্ত বখাটের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে শিশুর পরিবারটি। চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মৈশাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এ শিশু ছাত্রীটি প্রতিদিনের ন্যায় স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হয়। ১৭ মে সকাল ৯টায় দক্ষিণ মৈশাদী গ্রামের মৃত ইব্রাহিম খার ছেলে এলাকার চিহ্নিত বখাটে মোঃ স্বপন খা (৪০) পথিমধ্যে শিশুটিকে চকলেট ও আচারের লোভ দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী বাগানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। শিশুটির চিৎকারে আশে পাশের লোকজন দৌড়ে আসলে বখাটে স্বপন খা দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বপন এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয়। তারপর থেকে শিশুটি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিষয়টি জেনে বাবা-মাকে বুঝিয়ে শিশুটিকে বিদ্যালয়ে আসার অনুরোধ জানালে শিশুটি শনিবার বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু তার সহপাঠীরা কেউ তার সাথে কথা বলে না এমনকি পাশেও বসে না। যে কারণে শিশুটি মন খারাপ করে এক ঘন্টা পর কাউকে না জানিয়ে বাড়ি চলে যায় বলে জানালেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ বাসেদ খিলজি। দিন মজুর পরিবারের এ শিশুটি সারাদিন ঘুমায় ও কান্না করে, কারো সাথে কথা বলে না, মাকে ছাড়া ঘরের আলাদা রুমে যেতে ভয় পায়। এক অজানা আতংক শিশুটির মাঝে কাজ করছে বলে জানালেন শিশুর মা ফাতেমা বেগম। শিশুটির সাথে যৌন নিপীড়নের বিচার চেয়ে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের কাছে একটি অভিযোগ দেন শিশুর মা ফাতেমা বেগম। পুলিশ সুপারের নির্দেশে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ শনিবার রাতে সম্ভাব্য স্থানে বখাটেকে ধরতে অভিযান চালায়। এদিকে কেন পুলিশকে জানালো এজন্য বখাটে স্বপন ফোনে শিশুর বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে জানালেন শিশুর বাবা শাহ আলম রাজা। চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালি উল্লা অলি শিশু ও তার বাবা মাকে এলাকায় গিয়ে সান্ত¦না দিয়ে বখাটেকে আটক করে শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দেন। মৈশাদীতে গিয়ে জানা যায় বখাটে স্বপন ২ বছর আগেও আরেকটি শিশুটিকে ধর্ষণ করে। যা নিয়ে এলাকায় তখন সালিশ হয়। সে এলাকায় ভবঘুরে এবং মাদক সেবনকারী বলে জানা যায়।