
স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুস সবুর মন্ডল বলেছেন, আগস্ট মাস ইতিহাসের ঘটনাবহুল শোকের মাস। এবার আবার এ মাসেই হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব। একদিন পর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। এ মাস শেষেই পবিত্র ঈদুল আযহা। আরেকদিকে নদ-নদীর পানি বাড়ছে, বন্যার আশঙ্কা। সবদিক থেকে সামনের দিনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ তৎপর ও সজাগ থাকতে হবে। সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত সম্পন্ন, নৌপথের যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা, নৌ দুর্ঘটনা রোধে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধ ও সিএনজি স্কুটার দৌরাত্ম্য বন্ধে কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং বিআইডাবিস্নউটিএকে কঠোর ব্যবস্থাপনা রাখতে হবে। গেলো ঈদের ন্যায় এবারও ঈদ জামাত কমিটির দ্বারা মাঠে স্বেচ্ছাসেবক টিম কাজ করবে এবং শহরের রাস্তায় ও লঞ্চঘাটে স্কাউট, রোভার স্কাউট থাকবে। তিনি গতকাল ১৩ আগস্ট রোববার সকাল ১০টায় তাঁর সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা এবং পবিত্র ঈদুল আযহা উদ্যাপনে প্রস্তুতি সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
সভার শুরুতে গত মাসের সিদ্ধান্ত সমূহের অগ্রগতি তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তার। আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার পরপরই অনুষ্ঠিত হয় ঈদুল আযহার প্রস্তুতি সভা। দুটি সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম, নৌ পুলিশ সুপার সুব্রত হালদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এমএ মতিন মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর সদর সার্কেল) মোঃ আফজাল হোসেন, চাঁদপুর সদর ইউএনও কানিজ ফাতেমা, হাজীগঞ্জ ইউএনও মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার, মতলব উত্তর ইউএনও শারমিন আক্তার, শাহরাস্তি ইউএনও মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ, হাইমচর ইউএনও আবু হাসনাত মোঃ মাঈনউদ্দিন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ছিদ্দিকুর রহমান ঢালী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত, বিআইডাবিস্নউটিএ’র উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন, বাবুরহাট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, রেলওয়ে আক্কাছ আলী একাডেমির প্রধান শিক্ষক গোফরান হোসেন প্রমুখ। এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন, চাঁদপুর-এর কর্মকর্তা, টেকনিক্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ আরো কজন বক্তব্য রাখেন। কমিটির অন্যান্য সদস্য এ দুটি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তাদের আলোচনা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক গত মাসের সভার সিদ্ধান্তের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এ দুটি সভায়। বিশেষ করে সুষ্ঠু নৌ ব্যবস্থাপনা জোরদার, শহরের রাস্তাগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা, যাত্রীদের নিরাপত্তায় কন্ট্রোল রুম চালু করা, জঙ্গিবাদী তৎপরতা যাতে কেউ চালাতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকা এবং কোরবানির পশুর হাটে বা পশু পরিবহনে চাঁদাবাজি রোধকল্পে ব্যবস্থার উপর বেশি গুরুত্ব পায় সিদ্ধান্তে।
জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়ক বা স্থানীয় সড়কের উপর কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্যে প্রশাসন থেকে কোনো ইজারা দেয়া হয়নি। তাই সড়কের উপর বা সড়কের পাশ ঘেঁষে কোনো হাট বসানো যাবে না। কোরবানির বর্জ্য যেখানে-সেখানে এমনকি সড়কের পাশে ফেলা যাবে না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সকল থানার অফিসার ইনচার্জ উদ্যোগ নিবেন। তিনি বলেন, নদী এখন উত্তাল। লঞ্চে যাত্রী ওভারলোড করা যাবে না। শোক দিবসের কর্মসূচিতে সবাইকে উপস্থিত থাকতে হবে। পবিত্র ঈদুল আযহা সবার জন্যে সুখকর হবে আশাবাদ ব্যক্ত এবং উপস্থিত সদস্যদের আগাম ঈদ শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক।
পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তাঁর বক্তব্যে বলেন, চাঁদপুরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা পুলিশ প্রশাসনের অব্যাহত রয়েছে। মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম থেমে নেই। আগস্ট মাস এবং ঈদকে সামনে রেখে কুচক্রীদের অপতৎপরতা থাকতে পারে, তারা যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন পর্যায়ের যারা সরকারি কর্মকর্তা আছেন, সবাইকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। সড়কের উপর যাতে কোরবানির পশুর হাট না বসে সেদিকে নজরদারি থাকবে। আগের মতোই মানুষজন আসছে ঈদুল আযহা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যের মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশে উদ্যাপন করবে বলে আমার প্রত্যাশা।