মালয়েশিয়া থেকে শাহাদাত হোসেন:
চট্রগ্রামের মানুষের অতন্ত জনপ্রিয় খেলা ‘জব্বারের বলি’ খেলার দুই বারের চাম্পিয়ন মালয়েশিয়া মানব পাচারের ফাদে পড়েছেন । জব্বারের বলি খেলায় ২০০৯ ও ২০১১ সালের দুই বারের চাম্পিয়ন মহেশ খালি, চট্রগামের বজল বলি। মানব পাচারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারিয়েছেন।
মাস ছয়েক আগে মহেশ খালির আজম আলী নামক এক দালাল বলি খেলার কথা বলে তাকে ডেকে আনে।তাকে অনেকটা জোর করে ট্রলারে উঠায় । ট্রলারে যশোর ও ঝিনাইদহ এলাকার মোট ৩০ জন যাত্রী ছিল। বজল প্রথমে ভাবেনি আজম সাথে দেখা করতে আসলে মালয়েশিয়া যেতে হবে। পরিবারের কাওকে বলে আসতে পারেননি তিনি মালয়েশিয়া যাচ্ছে। ট্রলার সাগর পথে পারি দেয় মালয়েশিয়া উদ্দেশে।তাদেরকে উঠানো হয় আরো বড় ট্রলারে । ট্রলারে ছিল মিয়ানমারের ৪ মহিলা সহ আরও তিন চারশ যাত্রী। এই ভাবে ৮ দিন ৮ রাত সমুদ্রে কেটে যায়। ৮ দিনের ক্ষুধার কষ্টের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বজল অঝরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মাঝ পথে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় খাবার নিয়ে শুরু হয় কারাকারি মারামারি। এক পর্যায়ে এক লোক অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে তাকে সমুদ্রে ফেলে দিতে দেখে তিনি মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এই ভাবে অনেক কষ্টে ট্রলার থাইল্যান্ড তীরে গিয়ে থামে। থাইল্যান্ড এ আরেক দালাল তাদের নিয়ে যায় জঙ্গলে। হাতে পা বেধে তাদের উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। দালাল ফোন করে বজলের পরিবারের কাছে। বজলের চিত্কারে জমি জমা বিক্রি করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার আজম দালাল কে দেয়া হয় । পরে মালয়েশিয়া আরেক দালাল এর কাছে তাকে বিক্রি করে দেয়। ট্রাকে করে তাকে নিয়ে যায় মালয়েশিয়ার পাম অয়েল বাগানে। অসহায় বজল নিরুপায় হয়ে কাজ করতে থাকে পাম বাগানে। কিন্তু ৬ মাস কাজ করে ও মালিক ঠিক মত মজুরি দেয় না। একদিকে পুলিশী ভয় অন্য দিকে বাড়ির চিন্তা। এক পর্যাযে বজল অসুস্ত হয়ে পড়ে। মালয়েশিয়া তার কাছে দোজখ মনে হয়। দেশের পরিবার পরিজন কাছে যেতে চায় বজল । একদিন পাম বাগান থেকে এক বাংলাদেশির সহায়তায় পালিয়ে আসে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ দুতাবাসে। সরনাপন্ন হয় দুতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মুসরাত জেবিন এর সাথে । বজল অসহায়ত্বের কথা শুনে তিনি বাংলাদেশী মালিকাধিন আনিকা ট্রাভেল এন্ড টুরস থেকে একটি টিকেট ফ্রী নিয়ে দেন এবং তাকে এখন ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন
শিরোনাম:
সোমবার , ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।