এম রহমান
চাঁদপুর অঞ্চলের মেঘনা নদীতে চলাচলরত বিভিন্ন নৌযান থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, সার, গম, চিনি, সরিষা পাচার হচ্ছে। এখানকার চিহ্নিত চোরাকারবারিরা জাহাজ থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে এসব নামিয়ে আনছে। থেমে নেই চোরাচালান। আবারো সক্রিয় নদীর কালোবাজারিরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বড় স্টেশন মোলহেড, ৫নং ঘাট, কয়লা ঘাট, যমুনা রোড, পাইলট হাউজ, কসাইখানা, কোড়ালিয়া চর এলাকায় চোরাকারবারিদের নিরাপদ আস্তানা। দিন-রাত তারা এসব স্থানে অবস্থান করে চোরাই পণ্য কেনার জন্যে টাকা জোগাড় করে। যার কাজ নৌকা-ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমে পড়া এবং কোস্টগার্ডের টহলকে ফাঁকি দিয়ে পণ্য নামিয়ে এনে নদী থেকেই বিভিন্ন মোকামে চালানি করে দেয়া। কিছু পরিমাণ জ্বালানি তেল পুরাণবাজার ও কয়লা ঘাটে উঠে। সম্প্রতি ৫নং ঘাটে চোরাই সার সহ একটি ট্রলার আটক করে কোস্টগার্ড। এর আগে শরীয়তপুরের পুলিশ চাঁদপুর থেকে পাচার হওয়া একটি সারের চালান আটক করে। তখন ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আটক চোরাই সারগুলো স্ট্র্যান্ড রোডের ব্লেকার মরু গাজীর বলে একটি সূত্র জানায়। মরু গাজী ওরফে মরু হাজীর নিজস্ব ট্রলার রয়েছে নদীর চোরাই পণ্য বহনে। বর্তমান সরকারের সময় এই ব্যক্তি একচেটিয়া নদীর পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জমজমাট ব্যবসা করে যাচ্ছে। সে সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।
কচুয়া উপজেলার এক যুবলীগ নেতার সাথে সখ্যতা থাকায় মরু হাজীর চোরাকারবারী ব্যবসা এখন তুঙ্গে। সে স্ট্র্যান্ড রোডে এখন বিরাট বাড়ির মালিক। এছাড়া মিজান ঢালী, সেলিম রাঢ়ী, নায়ায়ণগঞ্জের মনোয়ারসহ ১০ থেকে ১৫ জনের সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। তারা জাহাজের ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন, সয়াবিন, চিনি, সারসহ বিভিন্ন চোরাই পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের বিটার। প্রতিদিনই নদীতে চলাচলরত কার্গো, কোস্টার ও ট্যাংকার থেকে এসব পণ্য পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী নামিয়ে এনে মরু হাজী, ছোট আলীসহ চিহ্নিত কয়েকজনের কাছে বিক্রি করছে। কোস্টগার্ডের স্টেশন থেকে বোট নিয়ে তারা টহলে নামে কিনা তাৎক্ষণিক খবর দেয়ার জন্য চোরাকারবারিদের লোক ব্রিজের উপরসহ কয়েক স্থানে আগেভাগেই রাখা হয়। রোজার ঈদের আগে জাহাজ থেকে চোরাই পণ্য পাচার করতে গিয়ে কোস্টগার্ডের তাড়া খেয়ে ইউসুফ নামে এক ব্যক্তি নদীতে পড়ে মৃত্যুবরণ করে। নদীর পাড় শহরের চিহ্নিত এলাকায় কালোবাজারিদের আনাগোনা সবসময় দেখা যায়। তারা সুযোগ বুঝে জাহাজ থেকে পণ্য পাচার করছে। নৌ পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কোস্টগার্ডের অভিযানেও নদীর চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না। মালামাল আটক হলেও কালোবাজারি আটক হয় না।