
হাইমচর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ছাদ থেকে হোসেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর (দুলাল) মেলকার (৪০) নামের এক ইজি বাইক (অটো) চালকের অর্ধ-গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে হাইমচর থানা পুলিশ। গত ২৭ অক্টোবর সোমবার ফজর নামাজ পড়তে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
নিহত দুলাল মেলকার হাইমচর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ৩নং আলগী দূর্গাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড পূর্বচর কৃষ্ণপুর গ্রামের হাসিম মেলকারের বড় ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, অটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা দুলাল মেলকার গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) ফজর নামাজ পড়তে বের হয়ে আর বাড়ী ফেরেননি। চারদিন নিখোঁজ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের আশপাশ থেকে দুর্গন্ধ এলে মসজিদের ইমাম ও কর্মরত আনসার সদস্য সহ আশপাশের লোকজন দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ছাদে যান। সেখানেই দুলাল মেলকারের অর্ধ-গলিত লাশ দেখতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে নিহতের পরিবার। তারা মরদেহটি দুলাল মেলকারের বলে শনাক্ত করেন। পরে থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের ছেলে জানান, তার বাবার তেমন কোনো শত্রু ছিল না। তিনি অটো চালিয়ে সংসার চালাতেন এবং সবার সাথে হাসিখুশি ছিলেন। স্ত্রী তামান্না বেগমও কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার স্বামীর কারো সাথে শত্রুতা ছিল না। স্বামী-স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সুখে জীবন যাপন করছিলেন এবং তার স্বামী অটো চালিয়ে সংসার নির্বাহ করতেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাঁদপুর সদর সার্কেল মোঃ খায়রুল কবীর। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আজ বেলা সাড়ে ১২টায় খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তথ্য নিয়ে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির নাম হোসেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দুলাল মেলকার। তিনি গত ২৭ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন, তবে এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। লাশটি অর্ধ-গলিত হওয়ায় প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই ঘটনায় থানায় বর্তমানে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইমচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, দুলাল কিডনি রোগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার বাড়ি উপজেলা পরিষদের কাছেই। গত ২৭ অক্টোবর ফজরের নামাজ পড়তে বের হয়ে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাননি। পরে তারা থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান। পুলিশ নম্বরটি ট্র্যাক করে জানতে পারে, তিনি হাইমচর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। পরিবারকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে বলা হয়েছিল, তবে তারা কোনো জিডি করেননি। ধারণা করা হচ্ছে, অসুস্থতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।