শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুর পুরানবাজারে দেশ স্বাধীন হবার পর এই প্রথম অস্ত্রের মুখে ৬ জনকে হাত বেধে জিম্মি করে স্বর্নের দোকানে দুর্ধষ ডাকাতির ঘটনায় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ডাকাত আতংকে পুরানবাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। স্বর্নের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জয়গুরু স্বর্ন শিল্পালয়ের মালিক তপন বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানার একটি সাধারন ডায়েরী করেছে। কারন শুধুমাত্র একটি খালি সিন্দুক নেওয়ায় ও স্বর্নলঙ্কার টাকা পয়সা খোয়া না যাওয়ায় স্বর্ন ব্যবসায়ী তপন মামলা না করে জিডি করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে স্বনামধন্য কয়েকটি পত্রিকায় ১০ ভরি স্বর্ন,৮ভরি রুপা ও ৬হাজার টাকা সহ সিন্দুক ডাকাতি হওয়ার ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ঘটনা তদন্তে সদর সার্কেল নজরুল ইমলাম পুনরায় স্বর্নের দোকানে এসে দোকান মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় দোকান মালিক তপন জানায়, সিন্দুকে কোন স্বর্ন,রুপা কিংবা কোন টাকা কিছুই ছিলো না। অন্যের রক্ষিত খালি একটি সিন্দুক আমার দোকানে দীর্ঘদিন যাবত পরেছিলো। এর ভিতরে শুধু দুটো পুরনো ফুল হাতা সার্ট রয়েছে। এদিকে বানিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারে এ প্রথম ডাকাতির ঘটনায় ব্যবসায়ি ও সাধারন মানুষের মাঝে নিরব আতংক বিরাজ করছে। পুরানবাজার কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম ও টহল ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্যবসা ও সাধারন মানুষ। রাতের বেলায় পুরানবাজারের প্রত্যেকটি এলাকায় কমিউনিটি পুলিশের টহল ব্যবস্থা থাকার কথা থাকলে সম্প্রতি মনিটরিং এর অভাবে মাছ বাজার, মেরকাটিজ রোড সহ বেশ কিছু এলাকায় কমিউনিটি পুলিশের টহল কার্যক্রম চোখে পরছেনা। রাতের বেলায় কমিউনিটি পুলিশিং এর কিছু সদস্যকে বিভিন্ন চায়ের দোকানে খোশ গল্পে মশগুল থাকতে দেখা যায়। জানা গেছে পুরানবাজারের কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যরা ব্যক্তি বিশেষ কর্মচারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের বিভিন্ন দরবার ও ব্যক্তিগত কাজে কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ি কাজে লাগাচ্ছেন। ডাকাতির ঘটনার সময় খবর পেয়েও একজন কমিউনিটি পুলিশও ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুরানবাজারের ডাকাতি,চুরি ও নানা অপকর্ম রোধে পুলিশী টহল ব্যবস্থা ও কমিউনিটি পুলিশিংকে নতুন ভাবে সাজিয়ে প্রত্যেক এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা করা আব্যশক হয়েছে বলে ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষের অভিমত।
উল্লেখ্য গত বুধবার গভির রাতে একটি ষ্টীল বডি ট্রলার নিয়ে প্রায় পাইপ বন্দুক, নল বন্দুক, রামদা,ছেনি ও বোমা নিয়ে পুরানবাজার পুরাতন ফায়ার ডিবির মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। রাত আড়াই টায় তারা এক সাথে উপরে ওঠে এসে রাস্তায় থাকা ৬ জন পথচারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রশি দিয়ে বেধে ফেলে। পরে তারা স্বর্নের দোকানের তালা ভেঙ্গে ফেলে ভিতরে প্রবেশ করে পুরনো একটি সিন্দুক নামিয়ে নিয়ে আসে। ডাকাতিকালে নতুন রাস্তা দিয়ে রিক্সাচালক সেলিম সহ ২ জন যাওয়ার সময় ডাকাত দল দৌড়ে গিয়ে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে এসে স্বর্নের দোকানে ঢুকিয়ে চুপ করে বসে থাকতে বলে। রিক্সাচালক সেলিম কৌশলে স্বর্নের দোকানের পিছন দিয়ে বেড়িয়ে ডাকাত বলে চিৎকার করলে মানুষজন বেড়িয়ে আসতে শুরু করে। তাৎক্ষনিক পুলিশকে খবর দিলে পুরানবাজার পুলিশ পাড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে উপস্থিত হন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল স্বর্নের দোকানের সিন্দুক ট্রলারে তুলে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সুভাগ্যের বিষয় এই যে ডাকাতের নেওয়া সিন্দুকের ভিতরে কিছুই ছিলো না। কারন এ সিন্দুকটি পুরনো হিসেবে ক্রয় করে অন্য এক ব্যবসায়ি এ দোকানে তা রক্ষিত রেখেছে।