প্রতারক স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূ হাসপাতালে

শাহরিয়ার খান কৌশিক ॥ চাঁদপুরে চিহ্নিত দালাল ও প্রতারক লম্পট মোস্তফা শেখ গত সোমবার প্রকাশ্যে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম লাভলীকে মারধর করে। আহত অবস্থায় মাহমুদাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে হাসপাতালে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সামনে মোস্তফা শেখ প্রকাশ্যে তার স্ত্রী বাগাদী ইউনিয়নের মন্তাজ শেখের মেয়ে মাহমুদা বেগমকে শারিরীক নির্যাতন ও লাঞ্ছিত করে।
জানা যায়, রঘুনাথপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে লাভলী আক্তারের বরাদ্দকৃত একটি ঘর আত্মসাৎ করার জন্য প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করে দীর্ঘদিন যাবৎ হাইমচর উপজেলার আলগী চরকৃষ্ণপুরের মৃত রহমান শেখের ছেলে দালাল মোস্তফা শেখ চেষ্টা চালিয়ে যায়। মোস্তফা লাভলীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ও ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে। ঘটনার দিন সকালে লাভলীকে একা পেয়ে মোস্তফা টেনে হ্যাচড়ে রিক্সায় উঠানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় সে ডাক চিৎকার করলে তাকে প্রকাশ্যে মানুষের সামনে বেদম পিটিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে অবশেষে সে রক্ষা পায়।
একটি সূত্র জানায়, মোস্তফা নিজেকে কখনো পুলিশ কর্মকর্তা, কখনো আইনজীবী ও কখনো বা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। গভীর রাতে তাকে মহিলাসহ বিভিন্ন হোটেলে বসে কথা বলতে দেখা যায়। সে প্রতিদিন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সামনে অবস্থান করে অসহায় রোগীদের কাছে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসার কথা বলে বিভিন্ন ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। সাথে একটি বৃদ্ধ মহিলা রেখেছে। ওই মহিলা নিজেকে লম্পট মোস্তফার স্ত্রী পরিচয় দেয়। কিন্তু লম্পট মোস্তফা বলে ওই মহিলা তার ভাবি। এছাড়া সে, এ পর্যন্ত প্রায় ডজন খানেক মেয়েকে ভূয়া কাবিনের মাধ্যমে বিয়ে করে ইজ্জত হানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে এনে সর্বস্ব লুটে নিয়েছে। তেমনি মাহমুদা বেগম লাভলীকেও প্রলোভন দেখিয়ে একই ফাঁদে ফেলে তার নামিয় আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর নিজের নামে নেয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এ লম্পট মোস্তফার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানা ও আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
এ বিষয়ে মাহমুদা জানায়, তার স্বামী মোস্তফা তাকে গত সোমবার দুপুরে প্রকাশ্যে মারধর করে পালিয়ে যায়। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার বিরুদ্ধে যাতে কোন মামলা না করি এ জন্য বিভিন্নভাবে ও বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে হুমকি প্রদর্শন করে আসছে।
এ বিষয়ে মোস্তফার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সে জানায়, হাসপাতালের সামনে স্ত্রীর সাথে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। স্ত্রীকে যারা ইন্ধন দিচ্ছে তাদেরকে দেখে নেবে। স্ত্রীকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তালাক দিয়েছি।