ফরিদগঞ্জ(চাঁদপুর) সংবাদদাতা: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বৃদ্ধা মা সালেহা বেগম (৭০) কে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে স্বামীরঘর থেকে বের করে দিয়েছেন পুত্র ও পুত্রবধুরা।
উপজেলার ৬নং গুপ্টি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এর সাইসাঙ্গা গ্রামের পূর্ব পালের বাড়িতে গত ৬এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে এঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার বিধবা সালেহা বেগম ওই বাড়ির মৃত.শহীদুল্লাহ মিয়াজীর স্ত্রী।
নিজের পেটের সন্তান ও পুত্রবধুদের মারের আঘাতে বৃদ্ধা সালেহা বেগমের হাত ও বুকের পাশের একটি হাড় ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে মা সালেহা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে আহত বৃদ্ধা সালেহা হাউ মাউ করে কেঁদে বলেন, আমার ২ ছেলে ৫ মেয়ে। ছেলে এবং মেয়েরা সকলেই বিবাহিত এবং বিবাহিতা। বড় ছেলে জসিম উদ্দিন বিদেশ থেকে দেশে চলে এসছে। ছোট ছেলে শাহাদাত হোসেন পলাশ বিদেশে থাকে। তারা দুই ভাই এবং তাদের স্ত্রীরা আমার কোন খোঁজ খবর বা দেখবাল করে না। আমি অসুস্থ্য হলে বা অনাহারে থাকলেও তাদের কিছূই আসে যায় না। দেখৌ না দেখার ভান করে থাকে। সব সময় খারাপ আচরন করে। বলতে বলতে হাসপাতের বিছানায় শুয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন বিধবা সালেহা বেগম। ৫ মেয়ের ৩য় মেয়ে ফাতেমা আক্তারের স্বামী বিদেশ থাকায় সে আমার কাছে থেকে অন্যান্য মেয়েদের সহযোগিতা নিয়ে আমার খাওয়া দাওয়া ওষুধ সহ সকল ধরনের দেখবাল করে আসছে।
তিনি আরো বলেন, আমার বড় ছেলে জসিম উদ্দিন, ও তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তার রিমা, ছোট ছেলে প্রবাসী শাহাদাত হোসেন পলাশের স্ত্রী ফারিয়া আক্তার বিভিন্ন সময় আমাকে চাপ দেয় তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি সম্পূর্ণ অংশ তাদের নামে লিখে দিতে। তাতে আমি রাজি না হওয়ায়, কিছু দিন আগে তারা আমাকে অত্যাচার করে আমার ঘরের আলমারি ভেঙ্গে সম্পত্তির দলিল নিয়ে যায়।
সালেহা বেগম আরো জানান, ঘটনার দিন ছেলে জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তার রিমা, ছোট ছেলে শাহাদাত হোসেন পলাশের স্ত্রী ফারিয়া আক্তার চক্রান্ত করে আমার ঘরে আসে এবং তাদের নামে পুরো সম্পত্তি লিখে দিতে বলে। আমি বলি এই সম্পত্তিতে আমার ৫ মেয়েরাও অংশীদার। সবাইকে নিয়ে বসে যার যার প্রাপ্য অংশ তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে তাদের অনুরােধ করি। কিন্তু তারা কিছুতেই তা মানতে রাজি নয় বরং আমার কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে আমার হাতের ও বুকের পাশের হাড় ভেঙ্গে আমাকে জখম করে । এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এসময় তারা আমার মেয়ে ফাতেমাকে ও মেরেছে। পরে প্রতিবেশী ও আমার অন্যান্য মেয়েরা উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ডাক্তাররা আমাদেরকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, শুধু আমাকে নয় স্বামীর জিবীতাবস্থায় ছেলে ও ছেলের বউরা আমাকে ও আমার মরহুম স্বামীকে ও একাধিকবার মারধর করেছে. লোকলজ্জায় আমরা কাউকে বলতে পারিনি। আমার স্বামী মারা গেছে প্রায় ২ বছর হয়েছে। তার মৃত্যুর পরপরই তারা আমাকে আলাদা করে দিয়েছে। আমি আইনের কাছে বিচার চাই।
চাঁদপুরনিউজ/এমএমএ/