ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের সকদি রামপুর দাখিল মাদ্রাসায় ২০০৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ১লক্ষ ৪৫ হাজার ৪শ’ ৬০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যাক্তি হচ্ছেন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা সুলাইমান। মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদ দূর্বল হওয়ার কারণে এবং প্রশাসনিকভাবে কোন জোড়ালো তত্ত্বাবধান না থাকায় নানা দূর্নীতি জড়িয়ে পড়েছে শিক্ষকরা। এমন অভিযোগ অভিভাবক মহলের।
সরেজমিন মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সাবেক ও বর্তমান সভাপতি এবং অভিভাবকদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, ১৯৬৬ সালে স্থাপিত এ মাদ্রাসাটিতে ১৯৮৮ সাল থেকে সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা সুলাইমান। বর্তমানে তিনি মাদ্রাসা পরিচালনা করতে অনেকটা অক্ষম। এ কারণে অধিকাংশ দাপ্তরিক কাজ করেন সহ-সুপার মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। তাদের দু’জনের মাধ্যমেই উপ-বৃত্তির টাকাগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে সঠিকভাবে বন্টন হয়নি। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪শ’ ১৬ জন হাজিরা খাতায় থাকলেও বাস্তবে ১শ’জনও পাওয়া যায়নি।
মালেক নামে একজন অভিভাবক জানান, এ প্রতিষ্ঠানের সুপারের দায়িত্ব অবহেলার কারণে নানা অনিয়ম দেখা দিয়েছে। তার দু’ মেয়ে এ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু সুপার তাদের দু’জনের পিতা ও মাতার নাম মার্কসীট, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ও সনদপত্রে ভুল দিয়েছেন। যার কারণে তার দুই মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি হতে গিয়ে বিপাকে রয়েছেন। ভুলগুলো সংশোধন করে দিবেন বলেও নানা টালবাহানা করছেন।
আরেক অভিভাবক জানান, মাদরাসা সুপার ২০০৬ সালে ৭হাজার ৩শ’ ৫০, ২০০৭ সালে ১৪হাজার ৫শ’, ২০০৮ সালে ১৩হাজার ৫শ’ ৫০, ২০০৯ সালে ১৯ হাজার ৭শ’ ৫০, ২০১০ সালে ১৯ হাজার ৮শ’ ২০, ২০১১ সালে ২৪হাজার ৩শ’ ৯০, ২০১২ সালে ১৮হাজার, ২০১৩ সালে ১৪হাজার ৮শ’ ৫০ এবং ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ১৩হাজার ২শ’ ৫০, অর্থাৎ ১লক্ষ ৪৫ হাজার ৪শ’ ৬০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সহ-সুপার মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক জানান, সুপার সাহেব অসুস্থ থাকার কারণে দাপ্তরিক কাজ গুলো আমাকে করতে হয়েছে। কিন্তু টাকা পয়সা আত্মসাতের বিষয়গুলো আমার জানা নেই।
সুপার মাওলানা সুলাইমান জানান, আমি অসুস্থ থাকায় উপ-বৃত্তির সকল কাজ মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক করেছেন। আমার বিরুদ্ধে এটি ষড়যন্ত্র। মাওলানা রাজ্জাক এলাকার লোকদের নিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব তথ্য প্রচার করছেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হাজী মনিরুজ্জামান জানান, উপ-বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ বিষয়ে যে অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে উপ-বৃত্তির টাকা পূর্বে মুন্সিরহাট মাদ্রাসায় বিতরণ হয়েছে। আমি সুপার ও সহ সুপারকে বলেছি আমাদের মাদরাসার টাকা ওই মাদরাসায় কেন বিতরণ হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠানেই বিতরণ হতে হবে। এরপর আমি সুপারের কাছ থেকে বই বিতরণের তালিকা দেখলাম। সেখানে যে ছাত্র-ছাত্রীর তালিকা রয়েছে, সে পরিমান শিক্ষার্থী মাদ্রাসার শ্রেনী কক্ষে উপস্থিত পাইনি। তাদেরকে শিক্ষার্থী উপস্থিত করানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপ-বৃত্তির টাকা নিয়ে সকল কাজ করেছেন সহ-সুপার আঃ রাজ্জাক। তাদেরকে আমি বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য বলবো।