চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার-নতুনবাজার ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন ফাহিমা বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূ।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় ওই নারী পুরাণবাজার ব্রিজের গোড়া থেকে হেঁটে ব্রিজের উপর আসে। হাতে একটি পাত্র ছিল। ব্রিজের পশ্চিম পাশের মাঝ বরাবর এসেই হঠাৎ উপর থেকে ডাকাতিয়া নদীতে ঝাঁপ দেয়। চলাচলরত অন্যান্য নারী-পুরুষ ওই নারীকে ঝাঁপ দিতে দেখে তাকে বাঁচান বলে চিৎকার দেয়। ১০নং খেয়াঘাটের মাঝিরা, অন্যান্য লোকজন এমনকি নদীতে গোসল করতে আসা শিশুরা তাকে উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ডিঙ্গি নৌকার সাহায্যে পানিতে ওই নারীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। পাহাড় পরিমাণ উচ্চতায় ব্রিজের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে এ নারীর বাঁচার কথা নয়। যারা ঘটনাটি দেখেছেন তাদের কাছে অবিশ্বাস্য এবং অলৌকিক মনে হয়েছে। খবর পেয়ে তার স্বামী শাহীনসহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজন এবং এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে ফাহিমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সুস্থ করে তোলেন। ঘটনাটি সেখানে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বহু মানুষের ভিড় জমে যায়। কী কারণে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা কেউ বলতে পারেনি।
ঘটনার পরপর পুরাণবাজার ব্রিজের গোড়ায় গিয়ে জানা যায়, ব্রিজের পূর্ব পাশে বসবাস করতেন ফাহিমা বেগম। মৃত আঃ আউয়াল মাওলানার ছেলের বউ সে। তার স্বামী শাহীন হোসেন বড় স্টেশন ঠোঁডায় কফি-চা বিক্রি করেন। তাদের মাহবুব নামে ৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গৃহবধূ ফাহিমার বাপের বাড়ি হাইমচর উপজেলার গাজী নগর। সেখানকার সলেমান মোল্লার মেয়ে সে। স্বামী, ননদসহ এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক কোনো সমস্যা ছিলো না। এলাকাটিতে এমনিতেই ভীতিকর পরিবেশ। আলগাজনিত কিছু একটা পেয়ে বসেছে। ময়লা পানি ফেলতে ঘর থেকে বের হয়েছিলো ফাহিমা। সন্তান কোলে নিয়ে স্বামী শাহীন বাড়ির কাছেই দোকানে ছিলো। পরক্ষণে তাদের কাছে খবর আসে ব্রিজের উপর থেকে ফাহিমা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে এবং যারা দেখেছেন তারা জীবিত উদ্ধার করেছে।
এ প্রতিবেদক গৃহবধূ ফাহিমার সাথে কথা বললে সে জানায়, ”আপনারা চলে যান। আমার মায়রে বাঁচাতে গেছি। তার মা ওই জায়গায় পড়ে গেছে। মাকে বাঁচাতে যাই।” স্বামী শাহীন জানায়, তাদের মধ্যে পারিবারিক কোনো বিরোধ নেই যার জন্য তার স্ত্রী আত্মহত্যা করবে। দুপুরে রান্না করা খাবার সন্তানসহ এক সাথে খেয়েছে বলেও স্বামী শাহীন জানায়।