চাঁদপুর ফরকাবাদ ডিগ্রী কলেজ ছাত্রীর বিষ ক্রিয়ায় রহস্যজনক মৃত্যু
শাহরিয়ার খান কৌশিক,
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকের সাথে বাকবিতন্ডা ও অভিমানে চাঁদপুর ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রী তাহমিনা আক্তার(১৭) বিষ ক্রিয়ায় রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
নিহত তাহমিনা আক্তার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের খান বাড়ির আবুল খায়ের খানের মেয়ে। সে ফরকাবাদ ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার প্রথম বষের ছাত্রী।
কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুতে তার সহপাঠী ও পরিবারবর্গ হাসপাতালে এসে কান্না আহাজারি করতে থাকে ও তাদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
শুক্রবার সকালে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই শফিক কলেজ ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় উদঘাটন করতে লাশটি হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত জন্য নিয়ে আসে।
কলেজ ছাত্রীর মা রাশিদা বেগম জানায়, সকালে তাহমিনা কলেজ যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বিকেল পাঁচটায় বাড়িতে এসে ছটফট করতে থাকে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে কে যেন দুইটি ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়েছে সেজন্য বুকের ব্যথা ও বমি বমি আসছে।
তারপরে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলার কারণে তার এই করুণ মৃত্যুর হয়েছে। কারণ হাসপাতালে আনার পর তাকে ডাক্তার ও নার্স কেউই ভালোভাবে দেখেনি। তার শরীর থেকে বিষ ক্রিয়া ভালো ভাবে ওয়াশ করে বের করতে পারেনি।
নিহত কলেজ ছাত্রীর সহপাঠী মুক্তা জানায়, তাহমিনা সকালে কলেজে আসে ১ ঘন্টা ক্লাস শেষে কলেজ থেকে বের হয়ে যায়। দুপুরের পর আমরা পাঁচ বান্ধবী মিলে ঘুরাঘুরি করি। বিকেলে পাঁচ জনে চটপটি খেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই।
সে প্রায়ই তার মোবাইল থেকে কার সাথে কথা বলতো তা আমরা জানিনা। তবে কোন ছেলের সাথে তার বাকবিতন্ড হয়েছে। ঘটনার দিন তার মন খুব খারাপ ছিল।
এদিকে কলেজ ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাটি কেউ স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না।
ফরকাবাদ কলেজের ব্যবসায়িক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাশেদ কয়াল নামে এক ছেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে অনেকে ধারণা করেছে।
হয়তোবা তার সাথে ঘটনার দিন কোনো কিছু হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ কলেজ ছাত্রী তাহমিনা মারা যাওয়ার খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান কলেজ ছাত্র রাশেদ ও তার আগে বন্ধু। সে সময় রাশেদ কয়াল হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় বসে বসে কাঁদছিল।
সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে সে থমকে গিয়ে মোবাইলে ফ্লেক্সি লোড করার নাম করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) আসিফ হাসান চৌধুরী জানায়, অতিরিক্ত বিষ ক্রিয়ার কারণে কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর ঘটনাটি সাথে সাথে মডেল থানাকে অবহিত করা হয়েছে।