রিফাত কান্তি সেন:-
এই মাত্র জেনো উড়োজাহাজটি আকাশ থেকে আছড়ে পড়েছে গ্রামে।
প্রথম দর্শনে তা-ই মনে হবে। শখের উড়োজাহাজটি যে হৃদয়ের সবটুকু দরদ দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি। ইঞ্জিন, ককপিট, সিঁড়ি, দরজা, জানালা, বসার আসন—সবই রয়েছে।উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে ফরিদগঞ্জের ১৫ বছরের কিশোর মুরাদ হোসেন।
আড়াই মাস ধরে চেস্টা করে অবশেষে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে উড়োজাহাজটি।
মনের মাধুরী মিশিয়ে,নয়ন জুড়ানো উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে মুরাদ।
তবে এখনো নাকি পুরোপুরি শেষ হয়নি উড়োজাহাজের কাজ।
সে জানায়, যেভাবেই হোক বিজয় দিবসের আগেই উড়োজাহাজ বানানো শেষ করবে ।
তার পর বিজয় দিবসে তা পানিতে চালাবে।
মুরাদের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে। বাবা নজরুল ইসলাম রিকশাচালক। মা জাহানারা বেগম বাকপ্রতিবন্ধী। চার ভাইবোনের মধ্যে মুরাদ বড়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হয়েছিলো মুরাদের। দারিদ্রতার ভয়ালঘ্রাসে পড়ালেখা করা হয়নি তার।খরচ চালাতে পারেননি তার বাবা। আর তাই পড়াশোনা এখানেই শেষ। বিদ্যুতের সরঞ্জামের দোকানে কাজ করে সে। ছোটবেলা থেকেই মুরাদ একটু খেয়ালি,কোন কিছু তৈরি করার ব্যপারে সে আগ্রহী। তার শিল্পী মন নতুন কিছু খুঁজে বেড়ায়। শখের বশে আপন মনে মুরাদ নানা জিনিস বানায়। কখনো গাড়ি, কখনো লঞ্চ, কখনো হেলিকপ্টার। এর পর পানিতে ভাসিয়ে দেয়। তা দেখে আনন্দের শেষ থাকে না গ্রামবাসীর।গ্রামের বাসিন্দা তছলিম মোহরী বলেন, ‘মুরাদের এমন উৎসাহ দেখে আমিসহ এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করারর চেস্টা করি। তার নিপুণ হাতের কাজ দেখে আমরা অভিভূত হই। সাধ্য থাকলে আমার নিজের পকেট থেকে লাখ টাকা দিয়ে দিতাম। যে টাকায় সে আরও নতুন কিছু তৈরি করে আমাদের দেখাতে পারত।’কীভাবে এমন সুন্দর উড়োজাহাজ তৈরি করল, জানতে চাইলে মুরাদ বলে, আড়াই মাস ধরে একটু একটু করে উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে সে। স্টিলের রড, কাঠ, ব্যাটারি দিয়েই উড়োজাহাজটি তৈরি করা হয়েছে। ভেতরে ইঞ্জিনও আছে। চালু করলে একদম উড়োজাহাজের মতো শব্দ শোনা যায়। বিমানের চালকের জন্যও বসার আসন রয়েছে। তা ছাড়াও আছে আরও সাতটি আসন। খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।মুরাদের উড়োজাহাজটি দেখতে ভিবিন্ন এলাকার মানুষ,প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক সহ উৎসুক জনতা ভিড় করেন। আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দেখতে আসছে উড়োজাহাজটি।.
এলাকাবাসী জানান মুরাদ তাদের এলাকার গর্ব।
সরকারী সহযোগিতা পেলে মুরাদ আরো ভাল কিছু উপহার দিতে পারবে।
আমরা ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।