প্রতিনিধি
শাহরাস্তি পৌরসভাটি প্রায় সাড়ে ৩১ বর্গ কিলোমিটার আয়তন জুড়ে অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে পৌরসভাটি গঠিত হওয়ার পর তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান আ জা ম ফজলুল কাদের মাস্টার, দ্বিতীয় বারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হন মোশারফ হোসেন পাটোয়ারী। সরকার পদবী পরিবর্তন করার কারণে তিনি একই মেয়াদে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩য় নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন মোঃ মোস্তফা কামাল।
১৯৯৮ সালে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে পৌরসভাটি “গ” শ্রেণি থেকে যাত্রা শুরু করে। বর্তমান মেয়রের মেয়াদ কালীন সময় স্থানীয় সংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পৌরসভাটি “খ” শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে বছর খানেকের মাথায় উক্ত পৌরসভাটি “ক” শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
বর্তমানে পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড বৃদ্ধি পেয়ে ১২টি ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ৪৮ হাজার ৬ শ ৫০ জন। এরমধ্যে হোল্ডিং সংখ্যা ৭ হাজার ৭ শ ৩১ টি। পৌরসভার নির্বাচনের জন্য ২৫ হাজার ৭ শ ৩২ জন ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রয়োগ করবেন।
বর্তমান পৌরসভার নির্বাচন প্রায় আসন্ন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী ডিসেম্বরেই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। আর সেই ঘোষণা সামনে রেখে শাহরাস্তি পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে জনগণকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন জানিয়ে পোস্টার, বিলবোর্ড, পেস্টুন পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান দখল করে নিয়েছে। ভোটাররা নানা হিসেব নিকেশ করতে শুরু করেছে। বিশেষ করে নির্বাচন সামনে রেখে উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গন চাঙ্গা হতে শুরু করেছে।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দলীয়ভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সে ক্ষেত্রে ভোটারদের আগে প্রার্থীদের তার দলের সমর্থন আদায় করতে হবে। সেদিক বিবেচনা করে প্রার্থীরা দলীয় ও জনগণের সাথে সম্পর্ক দুটোই বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী মাঠ বিচরণ করলেও বিএনপির একক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। গত নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তফা কামাল। সে সময় বিএনপির দলীয় প্রার্থী ছিলেন আবুল খায়ের সিএ।
বর্তমানে বিএনপির মোস্তফা কামাল ছাড়া আর কাউকে প্রচারণায় দেখা যায়নি। নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েক প্রার্থী তাদের প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৬ জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী। তিনি বিগত ৩টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এতে একবার বিজয়ী হয়েছেন। গত নির্বাচনে দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় তিনি বিজয়ী হননি বলে অনেকেই মনে করেন।
সম্প্রতি নির্বাচন করার ঘোষণা দেন জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য, বিশিষ্ট সমাজসেবক উপজেলা আওয়ামীলীগের উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির আহবায়ক হাজী আব্দুল লতিফ। তিনি একবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। পৌর নির্বাচনে এবারই প্রথম বারের মত প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর।
নির্বাচনকে লক্ষ করে বেশ কিছু দিন থেকে প্রচার চালাচ্ছেন উপজলা যুবলীগের আহবায়ক তোফায়েল আহমেদ ইরান। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানেও রাজনীতির সাথে সময় পার করছেন। একবার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
শাহরাস্তি উপজেলার প্রাণ প্রিয় ব্যক্তি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম রুস্তম আলীর ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিয়ামুল করিম পিন্টু। তিনি পৌর মেয়র পদে নির্বাচন করার লক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন। উপজেলার রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ না নিলেও বাবার আদর্শকে সামনে রেখে জনগণের কাছে যেতে শুরু করেছেন তিনি।
শাহরাস্তি পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। নির্বাচনকে সামনে রেখে অনেক দিন আগ থেকেই প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাহবুবুল আলম চৌধুরী গত নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, তা দেখার বিষয়। দলীয় সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে প্রধান সহায়কের ভূমিকা পালন করবে সেটাই অনেকের ধারণা। দলীয় সমর্থন না পেলে কারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকবেন তা নিয়েও ভোটারদের মাঝে আলোচনা চলছে। দলীয় গ্রুপিং এক্ষেত্রে কতটা প্রভাব বিস্তার করবে তাও অনেক প্রার্থীদের চিন্তার বিষয়।
বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও বর্তমানে শাহরাস্তিতে বিএনপির রাজনৈতিক সংকট চলছে। এ সংকট আগামী নির্বাচনে কতটা প্রভাব পড়বে তা সময়েই বলে দিবে।
১৮টি মৌজা ও মহল্লা জুড়ে ১২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ৪ জন মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রায় অর্ধশত প্রার্থী তাদের প্রচারণা চালাচ্ছেন।
দলীয় সমর্থনের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নিজেদের ভীত মজবুত করতে কাজ করে
কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রচারণায় তারাও সমান তালে শরীক হচ্ছেন।
শিরোনাম:
বুধবার , ২২ মার্চ, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ৮ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।