প্রতিনিধি
চাঁদপুর শহরের হাজী মহসিন রোডস্থ ডাঃ মোবারক হোসেন চৌধুরীর বাসার ভাড়াটিয়া মৃত সফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে চাঁদপুর আল-আমিন স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাহেদ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে ২ জনকে আটক করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন। আটক দু’জনের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। গত ১১ এপ্রিল শুক্রবার সকালে হাজী মহসিন রোডস্থ প্রিমিয়ার হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডাঃ মোবারক হোসেন চৌধুরীর ভাগ্নে মোঃ সাহেদ চৌধুরী। ভাড়া বাসায় নিজ কক্ষে সাহেদ খুন হয়। মৃত সাহেদকে চাঁদপুর প্রিমিয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তরিগড়ি করে ঢাকার প্রেরণ করা হয়। মৃত সাহেদের মা ও বোনকে ঢাকায় রেখে লাশ তার গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলা সুবিদপুরের চৌধুরী বাড়িতে এনে আত্মীয় স্বজনকে মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারা গেছে বলে অপপ্রচার করে দাফন করা হয়। মৃত্যুর ২৫ দিন মৃত সাহেদের মা আত্মীয় স্বজনের চাপে পরে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনকে। মামলার তদন্তে পুলিশ প্রিমিয়ার হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা ও মৃত সাহেদের শয়ন কক্ষ থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করেছে। আদালতের নির্দেশে গত ১৫ মে ম্যাজিস্ট্রেট ও চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ দু’ থানা পুলিশের উপস্থিতিতে সাহেদের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ওই দিনই পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ৮জনকে গভীর রাত পর্যন্ত থেমে থেমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের মধ্যে সাহেদের মা নাসরিন জাহান মিতা চৌধুরী, বোন মনোয়ারা চৌধুরী হীরা, হীরার প্রেমিক কামরুল ইসলাম মুনও রয়েছে। সাহেদ হত্যার বিষয়ে এদের কাছ থেকে সদোত্তর জবাব না পাওয়ায় মৃত সাহেদের বোন মনোয়ার চৌধুরী হীরাকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ আটক করে চাঁদপুর মডেল থানা হেফাজতে নিয়ে রাখে। গতকাল শুক্রবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সন্দেহ হলে হীরার প্রেমিক কামরুল ইসলাম মুন শিকদারকে পুরাতন আদালত পাড়ার বাসা থেকে আটক করেছে।
একটি সূত্র জানায়, সাহেদ হত্যার দিন কামরুল ইসলাম শিকদার মুন ঢাকায় অবস্থান করে। সাহেদের মৃত্যু খবর জানতে পেরে মুন ঢাকায় হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ দেখেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, প্রেমিক মুনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনগুলোর কললিস্ট আমরা পরীক্ষা করেছি। এতে দেখা যায়, ঘটনার দিন সে চাঁদপুরে ছিলো না। তবে মামলার স্বার্থে আমরা মুনকে আটক করেছি। আরেকটি সূত্র থেকে জানা যায়, সাহেদ হত্যার ঘটনায় রহস্য রয়েছে। তার আত্মীয় স্বজনদের মধ্য থেকে হয়তো কেউ সাহেদকে হত্যা করেছে। যে বাসাতে সাহেদ হত্যা হয়েছে ওই বাসায় বহিরাগত ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারেনা বলে অনেকে জানায়।
আটক মনোয়ারা চৌধুরী হীরা ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম মুনকে আদালতে পাঠিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন। শুক্রবার থাকায় গতকাল রিমান্ডের শুনানী হয়নি। আগামী রোববার রিমান্ড শুনানী করে আটক দু’জনকে রিমান্ডে আনা হবে।
গতকাল শুক্রবার কবর থেকে উত্তোলিত সাহেদের ময়নাতদন্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে দুপুর দেড়টায় সম্পন্ন হয়। পরে তার মৃতদেহটি বিকেল সাড়ে ৫টায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।