আমিনুল ইসলাম:
সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে শ্বাশুড়িকে গুরুতর আহত করেছে এক পুত্র বধু। এমন ঘটনাটি গত ১৯ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চাঁদপুরের শাহ্রাস্তি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের খেড়িহর দক্ষিণপাড়া আলীর বাড়িতে ঘটে। জানা যায়, ওই বাড়ির মৃত হাজী মক্রম আলী শরাইয়ের পুত্র আবদুস ছোবাহানের তৃতীয় স্ত্রী জেসমিন বেগমকে তার নিজ নামের সাব-কবলাকৃত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দেয়ার ব্যাপারে মানসিক চাপ প্রয়োগ করতো তার স্বামী ও প্রথম স্ত্রী সকিনা বেগমের পুত্র কামাল হোসেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন গৃহবধু জেসমিনকে তার স্বামী ছোবাহান, পুত্র কামাল ও স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার স্বপ্না বেদম প্রহার করে। এতে ওই গৃহবধু গুরুতর আহত হলে ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ দুলাল মিয়া, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শোয়েব দেওয়ান, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি- মোশারফ হোসেন মুন্সী ও ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সহ অন্যান্যরা তাকে শাহ্রাস্তি হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ব্যাপারে আহত জেসমিন বেগম বলেন, আমার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর পুত্র কামাল হোসেন। সে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে তার পিতাকে বললে তিনি আমার নামীয় জায়গা বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা দেয়ার কথা বলে। যে কথার আলোকে এ বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই আমার স্বামী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। ঘটনার দিন সকালে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী আমার গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে। এ সময় কামালের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার স্বপ্না কাঠের আদল দ্বারা আমার মাথায় সজোরে আঘাত করলে মাথা থেকে ঝর ঝর রক্ত পড়তে থাকে। তারপরও পাষান্ড স্বামীর হাত চলতে থাকে আমার উপর। এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি- আমি ডায়াবেটিকস্ ও প্রেসারের রোগী। এত নির্যাতন আর সইতে পারছি না। যে কারণে স্বামী ও তার পরিজনদের বিচারের জন্য এ সমাজের কাছে, আইনের কাছে এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সঠিক এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান। এ বিষয়ে আহতের স্বামী আবদুস ছোবাহান বলেন, আমি দীর্ঘদিন প্রবাস যাপন করেছি। প্রায়ই বছর চারেক হয় দেশে এসেছি। গত ১ বছর যাবৎ আমার স্ত্রী জেসমিন সংসারে অর্ধিকতর কর্তৃত্ব দেখায়। যে কারণে ঘটে বাক্ যুদ্ধ। ঘটনার দিন শীতলপাটি, নামাযের বিছানা ও বিছানার চাদর নিয়ে সে পালিয়ে যায়। এ কথাটি আমার পুত্র বধু স্বপ্না আমাকে জানায়। এতে আমি ক্ষিপ্ত হই। প্রায় ১ ঘন্টা পর জেসমিন ফিরে আসলে এ বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে ঘটে আহত হওয়ার ঘটনা।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, সুখ-স্বাচ্ছন্দের সংসার থাকলেও অর্থাভাবে ঘটে প্রতিদিনই বাক্বিতন্ডা। সংসার প্রধান বেকার সাথে তার পুত্রও। যে কারণে সংসার পরিচালনায় হিমশিম খেতেন জেসমিন বেগম। তার উপর কামালের প্রবাস যাওয়ার বিষয়টি আরেক ইস্যু। সব মিলে অর্থই অনর্থের মূল। তবে গৃহবধু জেসমিন তার খেসারত গুণতে বারবার শিকার হচ্ছেন নির্যাতনের।