প্রতিনিধি
শাহ্রাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার অবহেলায় সাপে কাটা এক কিশোরীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৬ আগস্ট দুপুরে শাহ্রাস্তি উপজেলার আয়নাতলী গ্রামের মিজি বাড়ির নাজির আহম্মেদের কন্যা কুলছুম আক্তার (১৫) রান্না করার চালের জন্য পাত্রে হাত দিলে তাকে সাপে কামড় দেয়। তাৎক্ষণিক বেলা সাড়ে ৩টায় তাকে তার পরিবারের সদস্যরা শাহ্রাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ পারভিন আক্তার তখন সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে কুলছুম আক্তারকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে নেয়ার পর কুলছুমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পরিবারের সদস্যরা তাকে পুনরায় রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তখন কর্মরত চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দেয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কুলছুম আক্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক উপস্থিত লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। পরিবারের লোকজনসহ আয়নাতলী থেকে আসা লোকজনের সাথে কর্মরত ডাক্তাররা কয়েক দফা বৈঠকে সমাধানের চেষ্টা করেন। পরিবারের লোকজনের দাবি, দুপুরে তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তখন তাকে সুচিকিৎসা না দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়াই তার মৃত্যুর একমাত্র কারণ। তারা আরও জানান, কর্মরত চিকিৎসককে না জানিয়ে ও রোগীকে ভর্তি না করে জরুরি বিভাগের ইনচার্জ চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন। যার পরিণতিতে একটি তাজা প্রাণ চলে গেলো।
এদিকে এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মানিক লাল মজুমদার জানান, রোগীটি ভয় ও আতঙ্কের কারণে মারা যেতে পারে। পারিবারিকভাবে তাকে সাপে কামড় দেয়ার কথা জানা গেলেও সে রকম কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তাকে কোনো বিষাক্ত পোকাও কামড় দিতে পারে। চিকিৎসার ভাষায় এ ধরনের রোগী বেশিরভাগ আতঙ্কেই মারা যায়।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ মামুন ইসলাম জানান, জরুরি বিভাগের ইনচার্জের কর্মরত ডাক্তারকে কল করা উচিত ছিলো। এ ব্যাপারে তার কোনো ভুল বা অবহেলা থাকলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, ময়না তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনাটি জানা যাবে। তবে এ ধরনের পরীক্ষা আমাদের দেশে করা খুবই কঠিন।
এদিকে গতকাল ৭ আগস্ট সকালে শাহ্রাস্তি মডেল থানা পুলিশ লাশটি ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে কুলছুমের বাবা নাজির আহম্মেদ শাহ্রাস্তি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কুলছুম আয়নাতলী ফরিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী।