চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট চাঁদপুর শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকার ঢালী বাড়িতে আলোচিত হত্যা কান্ডের ঘটনায় ঘাতক নয়ন বেগম এখনো পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় সন্ধেহ ভাজন নয়ন বেগমের ২ মেয়েসহ ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার কোহিনুর বেগম (৪০)-এর মৃতদেহটি ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। বিকেলে জানাযা শেষে ফরিদগঞ্জ পশ্চিম ভাওয়াল খাঁন বাড়ির পারিবারিক কবরস্তানে নিহতের লাশ দাফন করা হয়। ঘটনা তদন্তে চাঁদপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নার বিকেল ৫টায় ঘটনাস্তল পরিদর্শন করেন। এই ঘটনায় নিহত কোহিনুর বেগমের ভাই মোহন বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় ৬নজকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সুপার সাামছুন্নাহার সন্দেহ ভাজন আসাামী নয়নের ২ মেয়ে তৃশা (১৮) ও তিথী (১২) কে দফায় দফায় জিজ্ঞাাসাবাদ করেন। জানা যায়,শনিবার সন্ধ্যায় নয়ন বেগম তার নিজ ঘরে পাওনাদার সৌদি প্রবাাশী আব্দুল মান্নানের স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে এই হত্যার ঘটনা সংঘটিত করে। ঘটনার পরেই তার সহয়োগীদেরর সাথে সে চাঁদপুর থেকে বোাগদাদ বাসযোগে কুমিল্লায় তার পরকীয়া প্রেমীক স্বামী পরিচয়ধারী শাাহারাস্তি ভাাই ভাই বিক্র ফিল্ডের মালিক আমলগীরের সাথে গিয়ে গা ঢাকা দেয়। অনুসন্ধানের জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার পর তার নয়নের পরিচয়ধারী স্বামী আলমগীর ৩জন যুবককে সাথে নিয়ে দোয়াভাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড যাত্রী ছাাউনির অবস্থান করতে দেখা যায়। নয়ন বাসযোগে আসার পর তাকে নিয়ে আলমগীর কুমিল্লা কান্দিরপাড় গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে বলে অনেকে ধারানা করেছে। রহমতপুর আবাসিক এলাকায় ঢালী বাড়িতে আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ নয়নেরর দুই মেয়ে তিশা, তিথী, বড়বোন তালতলা পাাটওয়ারী বাড়ির মিজান পাটওয়ারীর স্ত্রী কোহিনুর ও তার সহযোগী তরপচন্ডীর মৃত দুলাল মিজির ছেলে মহামেডান স্পোাটিং ক্লাবের কেয়ার ট্রেকার আরিফ মিজিকে আটক করে পুলিশ। দিনভর এ্ই আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে চাঁদপুর শহর টপ অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। এলাকার নয়নের কাছ থেকে টাকা পাওনাদার কয়েকজন মহিলা জাানায়, নয়ন বেগমের চারিত্র ভালো ছিল না। তার প্রথম স্বামী পৌরসভার কর্মচারী ইহছাককে ডিভোর্স দিয়ে পরকীয়া প্রমিক নামধারী স্বামী আলমগীরকে নিয়ে থাকেন। এছাড়া তার সাথে অনেক পরপরুষের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরের টাকা আত্মসার্ত করে সে ঢালী বাড়িতে ফাউন্ডেশন নিয়ে বিল্ডিং করেছে। নাছিমা বেগম ওরপে পাকিস্তানি সত্ববাধিকারী নিশা সঞ্চয় ঋণ দান সমবায় সমিতি থেকে নয়ন সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। ঋণের টাকা না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চেক চালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার দুই দিন পূর্বে মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ঘাতক নয়ন বেগম ও তার স্বামী আলমগীর নিশা সঞ্চয় ঋণ দান সমিতির মালিক নাাছিমা বেগমের বাসায় যায়। এসময় ঋণের টাকা রবিবার দিবে বলে প্রতিজ্ঞা করে আসে। নিহত কোহিনুর বেগম ফরিদগঞ্জ ষোল্লা মোাল্লা বাড়ির মৃত সুজ্জত আলী মোল্লার মেয়ে। তার তিন ছেলে রিপন, (২৮) বর্তমানে কাতারে অবস্থান করছেন দ্বিতীয় ছেলে শিপন ড্যাফোডিল ইউনিভারসিটিতে এম.বি.এ করছেন তৃতীয় ছেলে তানজিল আল-আমিন স্কুল এন্ড কলেজের এইচ.এস.সি প্রথম বর্ষের ছাত্র। শনিবার হত্যাকান্ডের ঘটনার পর পুলিশ নয়ন বেগমের বাসা থেকে কোহিনুরের রক্তমাখা মৃতদেহ উদ্ধার করার পর প্রথমত এলাকাবাসী তাকে সন্তাক্ত করতে পারেনি। পরে তার ছোট ছেলে তানজিল এসে তার মার পড়নের কাপড় ও মুখ দেখে চিনতে পেরে কান্নায় আহাজারি করতে থাকে। উল্লেখ্য, রহমতপুরআবাসিক এলাকার ঢালী বাড়ির আলী আহমেদ ঢালীর মেয়ে নয়ন বেগম (৩৫)-এর বাসায় কোহিনুরের জবাই করা লাশটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।শনিবার রাত ৯টায় মডেল থানা পুলিশ বাসার ভেতরে প্রবেশ করে খাটের নিচে লুকানো অবস্থায় কোহিনুর বেগম (৪০)-এর মৃতদেহটি উদ্ধার করে। ঘটনার পরপরই নয়ন বেগম এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
নয়ন বেগম দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ ১৫/১৬টি সমবায় সমিতিসহ বেশ কয়েকজন পুরুষ-মহিলার কাছ থেকে লোনে টাকা নিয়ে সুদের ব্যবসা চালিয়ে যায়। নয়ন বেগম প্রায় এক কোটি টাকার মতো ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। রহমতপুর আবাসিক এলাকার ৯০ নাম্বার বাসার কোহিনুর বেগমের কাছ থেকে নয়ন বেশকিছু টাকা লোন নেয়। সে টাকা নেয়ার জন্যে ঘটনার দিন বিকেলে কোহিনুর বেগম দেনাদার নয়নের বাসায় যায়। টাকা নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা সৃস্টি
হলে এক পর্যায়ে নয়ন তাকে বটি দা দিয়ে জবাই করে দরজা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যার ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার শ’ শ’ মানুষ ভিড় জমায়। ঘরের দরজা আটকানো দেখে প্রথমত ভেতরে খিল দেয়া ছিলো বলে ধারণা করা হলেও পরে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। কোহিনুর বেগমকে হত্যা করে নয়ন তার ঘরের ভেতরে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। কোহিনুরের স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি করতে আসলে সে সুযোগে নয়ন তার ঘরের দরজা আটকিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছেন। নিহত কোহিনুর বেগম রহমতপুর ঢালী বাড়ির সামনের ৯০ নম্বর বাসা প্রতীক্ষায় বসবাসরত এমএ মান্নানের স্ত্রী। তার স্বামী ও বড় ছেলের বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নয়ন বেগম মোটা অঙ্কের সুদের লোভ দেখিয়ে লোন নেয়। সে টাকা নিয়েই এ হত্যাকান্ড ঘটে। এ ঘটনায় চাঁদপুর শহরে ব্যাপক আলোচনা ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
শিরোনাম:
শনিবার , ২৩ জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ , ১০ মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।