চাঁদপুর : চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার-পুরানবাজার সেতু মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। নিরাপত্তা খুঁটিতে মালবাহী ট্রলার ও জাহাজ বাঁধায় সেতুটি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে সেতুটির অবস্থায় হওয়ার পরও প্রশাসনের কোন বিভাগের বিষয়টি নজরে আসছে না। সেতুর রক্ষাণা-বেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত সড়ক ও জনপথ বিভাগও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর নদী রক্ষাণা-বেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত বিআইডব্লিউটিএ কোন খোঁজও রাখছে না। চাঁদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সেতুটি।
২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে ২০০৫ সালে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী এর উদ্বোধন করেন। শুরু হয় নতুনবাজার-পুরানবাজারবাসীর দ্রুত যোগাযোগ। কয়েক বছর পারাপারে টোল দিতে হলেও প্রায় দু’বছর আগে সেতুটি টোলমুক্ত করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি নির্মাণের পর থেকে সেতুর পাশে নদীগর্ভে থাকা প্রধান দুটি পিলারের গায়ে রশি ও শিকল দিয়ে বাঁধা সারি সারি কাঠ-বালু মালবোঝাই মাঝারি আকৃতির ট্রলার, জাহাজ ও কার্গো। প্রতিনিয়ত পিলারের সাথে বেঁধে রেখে সেতুটির প্রধান দুটি পিলার ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছে। সেতুটির পাশে রয়েছে চাঁদপুর কোস্টগার্ডের অফিস।
এছাড়া ওই এলাকায় রয়েছে চাঁদপুর পৌরসভার কার্যালয়, চাঁদপুর মডেল থানা, সিভিল সার্জন কার্যালয় ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি সদর হাসপাতাল। এতসব সরকারি প্রশাসনিক কার্যালয় থাকার পরও সবার চোখের সামনে সেতুর প্রধান পিলারের গায়ে মোটা রশি, শিকল ও নোঙর ফেলে প্রতিনিয়ত বিপদের সম্মুখীন করে তুলছে সেতুটি। সেতুর নিচ দিয়ে চলাচলকারী লঞ্চ ও জাহাজের ঢেউয়ে পিলারের সাথে বেঁধে রাখা কার্গো-জাহাজের দোলা আঘাত হানে পিলারে গায়ে। এতে যে কোন সময় সেতুর পিলারে আঘাত লেগে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছিরউদ্দিন আহমেদ চাঁদপুরনিউজ২৪ডটনেটকে বলেন, বিষয়টি নজরে পড়েনি। অবশ্যই আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি এই সেতুটি হুমকির সম্মুখীন হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। বিষয়টি দেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলবো দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক ও চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেনচাঁদপুরনিউজ২৪ডটনেটকে বলেন, বিষয়টি আমাদের কর্মক্ষেত্রে পড়ে না। সেতুটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন। এছাড়া এসব দেখার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। বিশেষ করে চাঁদপুর কোস্টগার্ড স্টেশন যেহেতু কাছাকাছি অবস্থিত সেহেতু তারা বিষয়টির দিকে নজর দিতে পারেন। তাতে নদী পথে চলাচলকারী নৌযানও নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে চলতে পারবে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সেতুটি রক্ষাণা- বেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। বিষয়টি নজরে না আসলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জরুরিভাবে দেখার জন্য নির্দেশ দিচ্ছি।