চাঁদপুর সদর উপজেলায় ১৩নং হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরীঘাট এলাকায় চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে, উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ককটেল বিষ্ফোরন, ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। হরিণা ফেরীঘাটে চাঁদাবাজি ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষ চাঁদপুর মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোর ৬টা থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় ওসি তদন্ত আরিচুল হক, পুরানবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুব মোল্লা এস.আই মহিউদ্দিন সহ তাদের সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হরিণা ফেরিঘাটে সংঘর্ষের ঘটনায় হাসিম গাজী, মানিক গাজী, তারিক সাহেব, আমির গাজী, বাবুল গাজী, মোস্তফা গাজী, বসতঘর ভাংচুর ও হাসিম গাজীর ভাতের হোটেল ও মানিক গাজীর ভাতের হোটেল, বাবর আলী গাজীর মুদি দোকান ঈসমাঈল গাজীর ভাতের হোটেল ও মনির গাজীর মুদি দোকান ভাংচুর করা হয় বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানায়। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, হরিণা ফেরিঘাটে চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হানারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবু ছৈয়াল ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি টিটু গাজী লোকজনদের সাথে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। ঘাট ইজাদার ও বর্তমান হানারচর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ননি গাজীর ছেলে টিটু গাজীর সাথে ঘাটের ইজারার টাকা উঠানো নিয়ে প্রতিপক্ষদের বাকবিদন্ডের সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনায় হরিণা ঘাটে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। টিটু গাজীর ছোট ভাই টুটুল গাজী বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবু ছৈয়ালের ছেলে আল-আমিন সহ ৯জন কে আসামী করে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। গত রবিবার রাত্র সাড়ে ১১টা চাঁদপুর মডেল থানার এস.আই মাসুদ শামীম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হরিণা চৌরাস্তা থেকে হাবু ছৈয়ালের ছেলে
মামলার ২নং আসামী আল-আমিন ছৈয়াল কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটককের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত্র ২ টায় আবারো উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করে। রাতে উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও প্রায় ২০ থেকে ২২টি ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভোর সাড়ে ৬টায় আবারো শুরু হয় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় ঊভয়পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় শামিরা (১২), মাসুদ (২০), জুয়ের (১৮), নাসির গাজী (৪৫) কে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয়। হরিণা ফেরি ঘাটে এ সংংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষ চাঁদপুর মডেল থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেন। এঘটনায় হাবু ছৈয়াল জানায়, হরিণা ফেরিঘাটে ইজরাদারের নামে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ননি গাজীর ছেলে টিটু গাজী, মোবারক, মেছু ছৈয়াল, ইব্রাহিম গাজী প্রতিদিন ট্রাক ড্রাইভারের কাছ থেকে পারাপারের নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঘটনার দিন রাতে মানিক গাজী ও হাসেম গাজী কাছে চালকরা মৌখিক অভিযোগ করলে তারা ঘাট ইজদার টিটু গাজীর সাথে প্রতিবাদ করে। এর কিছুক্ষণ পর টিটু গাজী তার লোকজন নিয়ে ককটেল বিস্ফোরন চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘরবাড়ি ভাংচুর করে এবং লুটপাট চালায়। তারা কবরস্থান, দোকান ও বসতঘরে বেশ কয়েকটি ককটের বিস্ফোরণ করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিস্ফোরন হওয়া ককটেলের আলামত জব্দ করে। এদিকে ঘাট ইজাদার টিটু গাজী জানায়, হাবু ছৈয়ালের ছেলে আল-আমিন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ইয়াবা বিক্রি করে আসছে। ঘাট ইজারা নেওয়ার জন্য মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে তারা হরিণাঘাটে এই হামলার ঘটনা নিজেরা ঘটিয়ে অন্যের উপর দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করে। তিনি আওয়ামীলীগের সভাপতি বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে যুবলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হরিণাফেরীঘাটে সংঘর্ষে ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে না পারে। বর্তমানে হরিণাঘাটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শিরোনাম:
শনিবার , ১৭ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।