হাজীগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল বাজার এলাকায় মোসাম্মৎ ফাজিয়া জাহান (২৯) নামে নারীকে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় আটক হয়েছেন এনসিসি ব্যাংক হাজীগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা মো. তারেক হাসান (৩৭)।
বর্তমানে তারেক জেলা কারাগারে রয়েছেন। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ বেলাল হোসেন সিনিয়র জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ (আমলী আদালত হাজীগঞ্জ) সোপর্দ করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
এর আগে মঙ্গলবার দিনগত রাতে এসআই বেলাল তারেক হাসানের বাসভবন শহরের ষোলঘর এলাকা থেকে তাকে আটক করেন। মামলার বিবরণ থেকে জানাযায়, তারেক হাসানের সাথে ফাজিয়া জাহান এর ব্যাংকে লেন-দেন করতে গিয়ে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। তারেক ফাজিয়া জাহানকে বিয়ে করার আশ্বাসে চলতি বছরের ১৬ আগস্ট বলাখাল বাজারস্থ আবাসিক এলাকায় ইটালী ভবন এর জনৈক দেলোয়ার হোসেনের বাসার পঞ্চম তলায় ভাড়া করে রাখেন। ওইদিন রাত আনুমানিক ১০টার দিকে তারেক হাসান এসে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফাজিয়া জাহানকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
এর আগেও তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করেন তারেক হাসান। এক পর্যায়ে ফাজিয়া জাহান অন্ত:সত্তা হয়ে পড়ে এবং তারেককে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু তারেক তাকে ৪ মাসের অন্ত:সত্ত্বা বাচ্চা নষ্ট করার জন্য পরামর্শ দেন। এরপরে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি মিমংসার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কোন উপায় না পেয়ে ফাজিয়া জাহান হাজীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২২, তারিখ: ২৩ অক্টোবর ২০১৯খ্রি.। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ফাজিয়া জাহান হাজীগঞ্জ উপজেলার লাওকোরা গ্রামের মুন্সী বাড়ীর মৃত ছেফায়েত উল্লার মেয়ে। তার এর পূর্বে আরেকটি বিয়ে হয়েছিলো। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তারেক হাসান মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৬নং দক্ষিণ উপাদি ইউনিয়নের করবন্দ গ্রামের মৃত ইসমাইল হোসেন পাটওয়ারীর ছেলে এবং সমাজসেবক মো. ইউসুফ পাটওয়ারীর ছোট ভাই।
তারেক হাসানও বিবাহিত এবং তার এক পুত্র ও কন্যা সন্তান রয়েছে। বিষয়টি সত্যতা যাচাই করার জন্য মোবাইল ফোনে কথা হয় মামলার বাদি ফাজিয়া জাহান এর সাথে।
তিনি বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শিকার এবং মামলা করেছেন বলে স্বীকার করেন। হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে আমি আসামীর বাসা থেকে আটক করে থানায় সোপর্দ করি। হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন ফোকাস মোহনাকে বলেন, এই ঘটনায় ফাজিয়া জাহান থানায় মামলা করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে আমরা আসামীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে তারেক হাসানের ঘটনার সাথে জড়িত তথ্য প্রমাণ পাওয়াগেছে।