নিজস্ব প্রতিনিধি॥
হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকার ৩বারের সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টর কমান্ডার ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটেছে। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় চাঁদপুর-লক্ষীপুর আসনের সংরক্ষিত সংসদ সদস্যের এপিএস পরিচয় প্রদানকারী ১ কর্মীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। পরে ১০নং গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক দুলাল হোসেন, আওয়ামীলীগ নেতা স্বপনের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০ টায় উপজেলার ৬নং বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের বেলচোঁ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আযহার পরের দিন রবিবার ৩ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর-লক্ষীপুর আসনের সংরক্ষিত সংদস সদস্য এ্যাড. নুরজাহান বেগম মুক্তা এমপি হাজীগঞ্জে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে আসেন। ওই দিন বেলচোঁ বাজারে একটি পথসভায় নুরজাহান মুক্তা এমপির কিছু সমর্থক হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির মাটি ও মানুষের নেতা, সাবেক সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর এমপির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকেই পুরো উপজেলা জুড়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর সকালে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম এমপির সমর্থক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-২ আলহাজ¦ মো. জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই ফারুক হোসেন বেলচোঁ বাজারে মাছ কিনতে আসে।
ওই সময় তার মোটর সাইকেলটি মাছ বাজারের পাশে আনোয়ারের ফলের দোকানের সম্মূখে রাখেন। এতে দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন মোটর সাইকেলটি সাইড করে রাখার জন্য ফারুক হোসেনকে অনুরোধ করেন। তিনি দোকানের মালিক আনোয়ারের অনুরোধে মোটর সাইকেলটি সাইড করতে গেলে পাশের চা দোকান থেকে নুরজাহান বেগম মুক্তার সমর্থক দুলাল হোসেন ও হাছান খা উঠে বলে, সে মেজর রফিকের লোক, তাকে ধর। এ কথা বলেই তার সাথে থাকা লোকজন (নুরজাহান মুক্তার সমর্থক) ফারুক হোসেনক মারধর শুরু করে।
খবর পেয়ে আলহাজ¦ জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে গেলে তাকে মফিজুল ইসলাম ও দুলাল লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন হাজী জসিম।
এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাং জাবেদুল ইসলামের নির্দেশে উপ-পরিদর্শক (এস আই) জয়নাল আবেদীন ও বলাই চন্দ্র দেবনাথসহ সর্ঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে নুরজাহান মুক্তার সাবেক এপিএস শাহাদাৎ হোসেনকে আটক করে থানা নিয়ে আসে।
এ প্রসঙ্গে নেতা-কর্মীরা বলেন, নুরজাহান মুক্তা হাজীগঞ্জে আসলে তিনি জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীদের তার সফর সঙ্গী করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ান। এমনটিই ঘটলো গত ৩ সেপ্টেম্বর বেলচোঁ বাজারে একটি পথসভায় আমাদের সাংসদ এর বিরুদ্ধে তার সমর্থকরা বিভিন্ন কু-রুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। এমন বক্তব্য শুনার পর পরই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে উপজেলা জুড়ে ক্ষোভ এবং উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও মুক্তার সমর্থকরা মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত রয়েছে। তারা কেউ কেউ বিভিন্ন ব্যবসার অন্তরালে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
অপরদিকে বিকেলে বেলচোঁ বাজারে বড়কুল পুর্ব ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মফিজুল ইসলাম নেতৃত্বে তার উপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিচারের দাবীতে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের দিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ বিষয়ে থানার উপ-পরিদর্শক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। এমনকি জসিম উদ্দিন ও তার ভাইকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করি।
এ প্রসঙ্গে থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাং জাবেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে আসা শাহাদাৎ হোসেনকে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ৩ জনের জিম্মা ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় এখনো কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। কোন পক্ষ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিরোনাম:
শনিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৫ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।