মেঘনা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ৯ কর্মকর্তার পকেটে গ্রাহকের প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এ ব্যাপারে ৬ জানুয়ারি সোসাইটির ১২নং অধিবেশনে ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে হিসাব চূড়ান্ত করা হয়। ওই বৈঠকে সবার সম্মতিক্রমে সব আমানতকারী সদস্যদের দায়-দেনা বর্তমান ও সাবেক কমিটির মধ্যে ভাগ-বণ্টন করা হয়। অথচ অদ্যাবধি কর্মকর্তারা দায়-দেনা পরিশোধ করেনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মেঘনা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের হাজীগঞ্জ ছাড়াও চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তিনটি শাখা ছিল। বর্তমানে সব শাখার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শাখাগুলোর আমানতকারী সদস্যদের দায়-দেনা পরিশোধ করার লক্ষ্যে চাঁদপুর শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও সাবেক সদস্য শাহজাহান খান সাজু দায়িত্ব নেন। এছাড়া কচুয়া শাখার দায়িত্ব নেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন, হাজীগঞ্জ ও উয়ারুক শাখার দায়িত্ব নেন সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সহ-সভাপতি আবুল খায়ের, সম্পাদক ফখরুল ইসলাম রাজু, হাজীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হোসেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবদুর রশিদ খান ও সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন।মেঘনা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের এক রেজুলেশন বইতে দেখা গেছে, ৯ জনের স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে চাঁদপুর শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও সাবেক সদস্য শাহজাহান খান সাজু এবং কচুয়া শাখার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন স্ব স্ব শাখার সব দায়-দেনা পরিশোধ করবেন। আর হাজীগঞ্জ ও উয়ারুক শাখার বিষয়ে সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ২ কোটি ৩ লাখ ২৩ হাজার ৫১৯ টাকা, সহ-সভাপতি আবুল খায়ের ১ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ২০৩ টাকা, সম্পাদক ফখরুল ইসলাম রাজু ২ কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৫ টাকা, হাজীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হোসেন ৬০ লাখ টাকা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবদুর রশিদ খান ১০ লাখ টাকা এবং সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার দায়-দেনা পরিশোধ করবেন। প্রতিবেদন উল্লেখ রয়েছে, সবাই সবার রেফারেন্স ও আÍীয়-স্বজনের টাকা যার যার হিসাবের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার পর দায় থাকলে অন্যগুলো পরিশোধ করবে। এছাড়া সমবায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছুসংখ্যক আমানত রয়েছে, তা সবাই মিলে পরিশোধ করবে। সোসাইটির সব আমানতকারী সদস্যকে যে যার অধীনে আমানত জমা রেখেছেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমানতের টাকা বুুঝে নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
অথচ জানুয়ারি থেকে অদ্যাবধি গ্রাহকের আমানতের টাকা পরিশোধ করেনি সোসাইটির কর্মকর্তা। একাধিকবার গ্রাহকরা জেলা ও উপজেলা সমবায় কার্যালয়ে গিয়ে কোনো কুলকিনারা করতে পারছে না। এ বিষয়ে ২৬ আগস্ট জেলা সমবায় কর্মকর্তা শেখ কামাল হোসেন ৯ কর্মকর্তাকে নোটিশ করেও সাড়া পাননি। সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ আগস্ট সোসাইটির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিখিত একটি জবাব দিয়েছেন। এছাড়া অন্য কর্মকর্তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেননি। ৯ কর্মকর্তার মধ্যে আবদুর রশিদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ২৬ তারিখের নোটিশ দেরিতে পেয়েছি। তাই যাওয়া হয়নি। আবার নোটিশ করলে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে যাব। তিনি আরও জানান, তার আত্মীয়-স্বজনদের টাকা অনেক বকেয়া রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা পরিশোধ করার চেষ্টা করছেন। দায়-দেনা প্রসঙ্গে সোসাইটির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন বলেন, গ্রাহকের আমানত পরিশোধ করতে চূড়ান্ত হিসাব সম্পন্ন হয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৯ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জেলা সমবায় কার্যালয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। আশা রাখি, তিনি তার আমানতকারী গ্রাহকদের দায়-দেনা প্রসঙ্গে বলেন, শিগগিরই আমার আত্মীয়-স্বজনের টাকায় পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করব।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১২ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।