পাথরঘাটায় জীবিত মুরগি ও ছাগলের রক্ত বের করে রোগীর মুখ মণ্ডল ও হাতে-পায়ে মেখে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তান্ত্রিক কবিরাজ মিনারা বেগমের বিরুদ্ধে। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তার স্বামী শামীম।
জীবিত মুরগি ও ছাগলের রক্ত দিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে অকপটে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মিনারা বেগম। তিনি নিজেকে একসঙ্গে দুটি ধর্ম পালনের কথাও স্বীকার করেছেন।
মিনারা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সরলতার সুযোগে কিছু প্রতারকচক্র এসে প্রতারণা করে। এদের সঙ্গে চিকিৎসা শাস্ত্রের কোনো মিল নেই।
মিনারার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বিরোধ হলে ১৬ বছর আগে চট্টগ্রামে চলে যান মিনারা। সেখানে গিয়ে তান্ত্রিক কবিরাজ বাবা তাহেরীর আস্তানার সন্ধান পেয়ে তার ভক্ত হন তিনি। সেখান থেকে তিন বছর সাধনা করে স্বপ্নযোগে আধ্যাত্মিকতা লাভ করেন। এরপর দেশের মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায় এসে ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগ, স্বামী-স্ত্রীর কলহের সুরাহা, জাদু-টোনা ও নানা গোপন রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তিনি। এ চিকিৎসায় পাথরঘাটার অনেক রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন বলেও তিনি জানান।
মিনারা জানান, তার ওপর দুটো জিনিস ভর করে আছে। একটি ভালো অপরটি খারাপ। ভালোটির জন্য নামাজ ও খারাপটির জন্য পূজা করেন তিনি। রোগের চিকিৎসা ভেদে ১৬৫১ থেকে ২৬৫১ টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।
পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা গোলাম কিবরিয়া জানান, কুসংস্কার ইসলাম সমর্থন করে না। এছাড়া কোনো প্রাণীকে জবাই না করে অঙ্গহানির মাধ্যমে রক্ত বের করে কষ্ট দেওয়া একটি বর্বরতা। এদের আইনের আওতায় আনা উচিত।
পাথরঘাটা থানার ওসি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি জানার পর খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।