চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
সড়কে চলাচলের জন্য কোনো বৈধতা না থাকলেও ‘ট্রাক্টর’ নামের মালবাহী যানবাহনটি অবাধে চলাচল করছে। শহর-গ্রাম সর্বত্র এটি বিনা বাধায় চলছে। আর ধ্বংস করে ফেলছে রাস্তাগুলো। শুধু তাই নয়, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটায়। শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে কাঁচা-পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে এবং সংস্কার করা হচ্ছে। অথচ এই ট্রাক্টর নামে এই যন্ত্র দানবটি এসব রাস্তা ধ্বংস করে ফেলেছে। তাই জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে গত অক্টোবর মাসের আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় চাঁদপুর -৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সড়কে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও ট্রাক্টর চলছে। সেজন্য জনগণের প্রশ্ন: ট্রাক্টর চলাচল করছে কার স্বার্থে?
এই ট্রাক্টরটির মূলত নাম হচ্ছে পাওয়ার টিলার। সেটি ইঞ্জিনের পেছনে ট্রলি ছাড়া। এটি তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তির সাহায্যে কৃষি কাজের জন্যে। আর এটিকেই কৃষি কাজে ব্যবহার না করে ইঞ্জিনের পেছনে বড় স্টিল বা কাঠ বডির ট্রলি লাগিয়ে এটির নাম দেয়া হয়েছে ট্রাক্টর। এই ট্রলির নিচে বিশাল সাইজের চারটি চাকা রয়েছে। এই চাকাগুলোই রাস্তা ধ্বংস করে ফেলে। এই ট্রাক্টর দিয়ে শুধু মাল পরিবহন করা হয়। বেশিরভাগ পরিবহন করা হয় ব্রিক ফিল্ডের ইট। এছাড়া রড, সিমেন্ট বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্য মালামালও পরিবহন করা হয়। অথচ এসব মালামাল মিনিট্রাক অথবা পিকআপ গাড়িতে করেও বহন করা যায়। ট্রাক্টর চলাচলের ক্ষতিকর দিকগুলো হলো: এর চালক অনভিজ্ঞ, অধিকাংশ ছেলে বয়সী, আনাড়ি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন এবং মাদকাসক্ত। এরা দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। এই বাহনটির বিশাল সাইজের ডোরাকাটা চাকার কারণে রাস্তা ধ্বংস হয়ে যায়। বিশেষ করে গ্রামের কাঁচা রাস্তা এবং হাইওয়ে রাস্তার তুলনায় কম মজবুত পাকা রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে এই ট্রাক্টর। এসবের সচিত্র প্রতিবেদন অনেকবার স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। জনগণ থেকে ব্যাপক দাবি উঠে জনস্বার্থে সড়কে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করার। দাবির প্রেক্ষিতে গত সেপ্টেম্বর মাসে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন এ বিষয়ে ব্রিক ফিল্ড মালিক সমিতি এবং ট্রাক্টর মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে করণীয় ঠিক করবেন বলে জানান। আর এ সংক্রান্ত একটি কমিটি করা হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কে প্রধান করে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত কোনো সভাই করতে পারেননি এডিএম। যা তাঁর সাথে কথা বলে জানা গেলো। তবে গতকাল জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কিছুটা অগ্রগতি আছে। আমরা পুলিশ সুপার ও এডিএমসহ মিটিং করেছি। তবে জনগণের দাবি এবং এমপির নির্দেশনার পরও জনস্বার্থ পরিপন্থী এই যানবাহনটি চলাচল এখনো কেনো বন্ধ হচ্ছে না তা জনগণ জানতে চায়।