শীতের এ সময় বাজার নানানরকম শাক-সবজিতে ভরা থাকে। দামও থাকে কম। কিন্তু বর্তমানে এ ভরা মৌসুমেও দাম দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে, এটা সবজির মৌসুম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুলা ও শালগম ছাড়া কোনো সবজির দাম ৫০ টাকার নিচে নেই। গতকাল রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে সবজির দামের এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপিও। এ ছাড়া প্রকারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে। তুলনামূলক সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে মুলা ৪০ টাকায়। পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ১০০ টাকা, শালগম ৪০, লাউ ৫০-৮০ টাকা প্রতি পিস, শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। ক্ষিরাই ৬০ টাকা। কুমড়া আকারভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শাকের দামও তুলনামূলক কিছুটা বেশি। এক আঁটি লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে, যা অন্যান্য সময় ১০-১৫ টাকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া লাউ শাক ৫০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা ও ডাঁটা শাক ২০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী হানিফুর রহমান বলেন, ছুটির দিন এলেই শাক-সবজির দাম বেড়ে যায়। বাজারে সবজির দাম শুনলেই মাথা গরম হয়ে যায়। এখন শীতের প্রতিটি সবজিই বাজারে চলে এসেছে, তারপরও দাম কমছে না। এমন কেন হচ্ছে বুঝছি না। বাজারগুলোতে মনিটরিং করতে কোনোদিন কাউকে দেখিনি। সরকার যেন সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা রাকিব মিয়া বলেন, গত দুই দিন বৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেক কৃষকের সবজি নষ্ট হয়েছে, তাই সব সবজির দাম একটু বেড়ে গেছে। আমরা যে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি দামে বিক্রি করি, বিষয়টা এ রকম নয়। অনেকটা বাধ্য হয়েই দাম একটু বাড়িয়ে রাখতে হয়। ডিমের বাজারে এখনো অস্থিরতা চলছে। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। এদিকে মাংসের বাজারে দেখা যায়, সরকার গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করলেও কেউ সে কথা শুনছে না। নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে বর্তমানে ৭৫০ টাকা কেজি, কোথাও আরও বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লেয়ার ও সোনালি জাতের মুরগির কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে স্থানভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস আগের মতোই ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মাছের বাজারে দেখা গেছে, পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। অনেকটা একই দামে বিক্রি হচ্ছে চাষের কই ও তেলাপিয়া। আকারভেদে রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি এবং চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা এবং শিং ও বাইলা মাছ প্রতি কেজি প্রকারভেদে ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০, মলা ৫০০, কাচকি মাছ ৬০০, বাতাসি টেংরা ৯০০, অন্য জাতের টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৭০০, পাঁচ মিশালি মাছ ২২০, রূপচাঁদা ১ হাজার ও বাইম মাছ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।