ইলিশের ভরা মৌসুম শেষের দিকে। এবার মাছ ঘাটগুলোতে নেই আগের মতো ইলিশের দেখা। দামও অস্বাভাবিক। এসবের মধ্যেই ৪ অক্টোবর থেকেই মা ইলিশ রক্ষায় আবারও ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। চাঁদপুরের মতলবের বিভিন্ন মাছ ঘাটগুলোতে দেখা যায়, ইলিশ কেনাবেচা চলছে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের ওপরে। বাকি ২০ শতাংশ ইলিশ এলসি সাইজ এবং ১ কেজির সাইজের ইলিশ দেখা গেছে খুবই কম। পর্যাপ্ত বড় ইলিশ না পাওয়া ও মাছের চড়া দাম এসব নিয়ে হতাশ জেলে, ব্যবসায়ী এবং ভোক্তাদের প্রশ্ন?
মতলবের আমিরাবাদ ও বাবুবাজারের পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘ইলিশের আমদানি কম। বৃহস্পতিবার বিকালে ছোট, মাঝারোসহ কয়েক মণের মতো মোকামে ইলিশ উঠেছে। গত বছরের চেয়ে এবার কেজিপ্রতি ৭০০-৯০০ টাকার কেজি বেশি ইলিশের দাম বেড়েছে।
মৎস্য ঘাটের তথ্য মতে, ১ কেজির ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২,৮৭৫ টাকা। একইভাবে ৫০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১,৫০০ টাকা দরে। ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ইলিশের দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজিতে বেড়েছে।
এদিকে মতলবের মেঘনা তীরের জেলে কালাচাঁন, ইমরান ও লিটন জানান, ছোট ইলিশ এখন কিছু মিলছে। কিন্তু তাতে দাদন (ঋণ) মেটানো সম্ভব নয়। কারণ, ৪ অক্টোবর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এখনো ধরা না পড়লে ইলিশ জালে কবে পাবেন তাঁরা? তাই আমাদের পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় সাধারণত পূর্ণিমা ও অমাবস্যার ওপর নির্ভর করে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী এ বছর ৪ অক্টোবর পূর্ণিমা শুরু। তাই এবার ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ বিশেষজ্ঞ ড. আনিছুর রহমান জানান, ডুবোচর, আবহাওয়া পরিবর্তন, পানিপ্রবাহ কমে যাওয়া, বৃষ্টিপাত হ্রাস, অবৈধ কারেন্ট জাল এবং জাটকা রক্ষায় ব্যর্থতার কারণে ইলিশের আহরণ কমে আসছে।